বড়াইগ্রামে জুসের সাথে বিষ খাইয়ে নাতিকে হত্যা

এফএনএস (আপন; বড়াইগ্রাম, নাটোর) : | প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৪:০৬ পিএম
বড়াইগ্রামে জুসের সাথে বিষ খাইয়ে নাতিকে হত্যা

নাটোরের বড়াইগ্রামে দাদীর বিরুদ্ধে বিয়ের বাড়িতে দুই বছর বয়সী নাতিকে জুসের সাথে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে নেয়ার পথে শিশুটি মারা যায়। এর আগে বিকালে উপজেলার ইকড়ি গ্রামের শাহাদাত শাহ'র বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া ওই শিশুর নাম নুর ইসলাম (০২)। সে জেলার গুরুদাসপুর উপজেলা সোনাবাজু পুর্বপাড়া গ্রামের শাকিল আহম্মেদ ও পায়েল খাতুন দম্পতির একমাত্র সন্তান। 

অভিযুক্ত দাদীর নাম সখিনা বেগম (৪৫)। তিনি সোনাবাজু পুর্বপাড়া গ্রামের আব্দুল মোতালেবের স্ত্রী। এদিকে, শিশুটি মারা যাওয়ার খবর পেয়ে গ্রামের লোকজন দাদীকে ঘরের জানালার সাথে বেঁধে ব্যাপক গনপিটুনী দিয়েছে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।  

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে বড়াইগ্রাম উপজেলার রোলভা গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের মেয়ে পায়েল খাতুনের সাথে সোনাবাজু গ্রামের আব্দুল মোতালেবের ছেলে শাকিল হোসেনের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে পুত্রবধুর সাথে শ্বাশুড়ির কলহ বিবাদ চলে আসছিল। এমনকি মাঝে মাঝেই পুত্রবধুকে মারপিটও করতেন তিনি। সর্বশেষ মাস তিনেক আগে পুনরায় তাকে পিটিয়ে জখম করলে স্ত্রীকে নিয়ে শশুর বাড়িতে চলে যায় শাকিল।

শুক্রবার শাকিল স্ত্রী সন্তান নিয়ে একই উপজেলার ইকড়ি গ্রামে মামা শাহাদাত শাহ'র বাড়িতে বিয়ে খেতে যান। শাকিলের মা ও ওই বাড়িতে দাওয়াত খেতে যান। সেখানে ছেলে ও ছেলের বউসহ নাতির সঙ্গে তার দেখা হয়। 

পুত্রবধু পায়েল খাতুন জানান, শনিবার তার মামাতো দেবরের বৌভাত অনুষ্ঠান চলছিল। দুপুর ১২টার দিকে তিনি ছেলেকে ঘুম পাড়িয়ে বাইরে যান। দেড়টার দিকে তার শাশুড়ি শিশুটিকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে জুস খাওয়ান। এরপরই তার শাশুড়ি হঠাৎ করেই বিয়ে বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে চলে যান। কিছুক্ষণ পরই তার ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে দ্রুত বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিষাক্ত কিছু খাওয়ানো হয়েছে বলে জানিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে নেয়ার পথে শিশুটি মারা যায়। তাকে সংসার ছাড়া করতে পরিকল্পিতভাবে জুসের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে শাশুড়ি তার ছেলেকে খাইয়েছে বলে এ সময় পায়েল দাবি করেন।

তবে দাদী সখিনা বেগম বলেন, আমার ছেলে নিজেই জুস কিনে দিয়েছে। সেই জিস আমিও খেয়েছি, নুর ইসলামসহ মেয়ের ঘরের নাতিকেও খাইয়েছি। আমাদেরতো কিছু হয়নি, কিন্তু সে কিভাবে মারা গেল আমি জানিনা। পারিবারিক কলহ থাকায় আমাকে ফাঁসাতে ছেলের বউ এগুলো বলছে।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, আপাতত এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার শিশুটির লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত শিশুটির মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত নয়। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জেনে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে