ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন শহরে রাশিয়া রাতভর প্রায় ৫০০টি ড্রোন ও ৪০টি মিসাইল নিক্ষেপ করেছে। রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেও হামলা অব্যাহত ছিল। এই ঘটনায় চারজন নিহত ও ৪০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি এটিকে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় হামলার মধ্যে একটি হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং উল্লেখ করেছেন, হামলায় কিঞ্জাল নামের শক্তিশালী ক্রুজ মিসাইলও ব্যবহার করা হয়েছে।
হামলা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শেষ হওয়ার সময় চালানো হয়েছে বলে জেলেনস্কি মন্তব্য করেন, যা রাশিয়ার আসল অবস্থান প্রকাশ করে। কিয়েভে আকাশে বিস্ফোরণের ধোঁয়া ভাসতে দেখা যায়। শহরের সামরিক প্রশাসনের প্রধান টিমুর তকাচেঙ্কো জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে একজন ১২ বছর বয়সী কন্যাশিশুও রয়েছে। কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিচকো বলেন, ধ্বংসাবশেষের আঘাতে শহরের একটি পাঁচতলা ভবনের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া একটি ব্যক্তিগত বাড়ি ও একটি কিন্ডারগার্টেনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট দপ্তরের প্রধান আন্দ্রি ইয়েরমাক টেলিগ্রামে জানান, হামলায় আবাসিক ভবন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তুতে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে এবং এটি “নাগরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ” হিসেবে অভিহিত করেছেন। কিয়েভের সাতটি জেলা হামলার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বেসমেন্ট, পাবলিক শেল্টার ও ঘরের করিডোরে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় বিস্ফোরণের শব্দ ও অনুভূতি পেয়েছেন।
একই সময়ে দক্ষিণী বন্দরনগরী ওডেসাতেও রুশ হামলার ধাক্কা অনুভূত হয়েছে। ওই শহরের প্রসিকিউটর অফিস জানিয়েছে, অন্তত দুই জন নিহত ও নয়জন আহত হয়েছেন। হামলার মধ্যে একটি হাসপাতালে মেটারনিটি ওয়ার্ডও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এটি এমন একটি রাত যা তারা আগে কখনো দেখেননি।
রাশিয়ার হামলায় দুইটি কেএন-২৩ ব্যালিস্টিক মিসাইল এবং পাঁচটি ইস্ক্যান্ডার-কে ক্রুজ মিসাইল ব্যবহৃত হয়েছে। ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানায়, রাশিয়ার এই আক্রমণ ইউক্রেনে তাদের সর্বশেষ বড় ড্রোন হামলার ধারাবাহিকতায় এসেছে। পোল্যান্ডও আকাশসীমা রক্ষা ও নাগরিক সুরক্ষার জন্য যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে।