খাগড়াছড়িতে এক মারমা কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে শুরু হওয়া অবরোধ কর্মসূচি উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারা উপজেলায় ১৪৪ ধারা অব্যাহত রয়েছে।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গুইমারা উপজেলার খাদ্য গুদাম এলাকায় অবরোধকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছ ফেলে সড়কে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সরে যেতে বললে সংঘর্ষ শুরু হয়। উত্তেজিত জনতার হামলায় সেনাসদস্যসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে ১১ সেনাসদস্য, তিন পুলিশ ও এক সাংবাদিক রয়েছেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ করে।
সংঘর্ষের পরপরই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বেশ কিছু দোকানপাট ও বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, খাগড়াছড়ি শহর ও শহরতলীতে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। দূরপাল্লার কোনো বাসও ছেড়ে যায়নি।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সদর উপজেলা পরিষদ এলাকায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত আটজন আহত হন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত নিকন চাকমা (২৫) নামে এক যুবককে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হয়।
অন্যদিকে, সাজেক ভ্রমণে যাওয়া প্রায় দুই হাজার ১৪৭ জন পর্যটককে সেনাবাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তায় শনিবার রাতে ঢাকায় পৌঁছে দেওয়া হয়।
এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবৈধ অস্ত্রধারী ও সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি সবার উদ্দেশে আহ্বান জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার জন্য।
রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার, পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা, পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল এবং সেনা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় প্রাইভেট পড়া শেষে ফেরার পথে অষ্টম শ্রেণির এক মারমা কিশোরী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়। এ ঘটনায় খাগড়াছড়ি সদর থানায় মামলা দায়েরের পর সেনাবাহিনীর সহায়তায় সন্দেহভাজন এক যুবক শয়ন শীলকে আটক করে পুলিশ। বর্তমানে তাকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।