প্রাথমিকে ছুটি কমিয়ে ৬০ দিন, পাঠদানে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার

এফএনএস (এস.এম. শহিদুল ইসলাম; সাতক্ষীরা) : | প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৮:৩৮ পিএম
প্রাথমিকে ছুটি কমিয়ে ৬০ দিন, পাঠদানে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদানের সময় বাড়াতে ছুটির ক্যালেন্ডারে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। আগের প্রায় ৭৯ দিনের ছুটি কমিয়ে এবার তা ৬০ দিনে নামিয়ে আনার কথা জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবু নূর মো. শামসুজ্জামান।

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরা শহরের লেকভিউ রিসোর্টে আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এ তথ্য জানান। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা)-এর কারিগরি সহযোগিতায় এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের জেলা কার্যালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মশালায় জেলার ৪০ জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক অংশ নেন।

ডিজি বলেন, “দেশের স্কুলগুলো বছরে মাত্র ১৭৯ দিন খোলা থাকে। শিক্ষার্থীদের পাঠদানের সুযোগ বাড়াতে ছুটি কমানো হচ্ছে। এতে তারা আরও বেশি সময় ক্লাসে থাকতে পারবে।”

এ সময় তিনি স্কুলের আশপাশে অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রসঙ্গও তোলেন। তিনি বলেন, “প্রায় প্রতিটি স্কুলের চারপাশে ঝালমুড়ি, ফুচকা, চটপটি, আইসক্রিমের দোকান সারি সারি দেখা যায়। এসব খাবারে কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় না। এক বালতি পানি দিয়েই সারাদিনের সব কাজ সারছে বিক্রেতারা। অথচ শিশুরা সেগুলো খাচ্ছে। অপরদিকে, সামর্থ্যবানরা তথাকথিত ‘জামফুট’ খাচ্ছেন, যেখানে কেমিক্যাল মেশানো হয়। আসলে খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আমরা এখনো পিছিয়ে আছি।”

তিনি শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, শুধু খাবারের প্রাপ্যতা নয়, নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে হবে। ফুড সিকিউরিটি ও ফুড সেফটি দুটো বিষয়ই সমান গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশিক্ষণে শিশুদের জন্য নিরাপদ খাদ্যের মৌলিক ধারণা, স্বাস্থ্যবিধি, করণীয়-বর্জনীয় ও হাত ধোয়ার সঠিক পদ্ধতি শেখানো হয়। শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে এসব বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন করবেন।

অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জাকারিয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান, সচিব ও এসটিআইআরসি প্রকল্পের পরিচালক শ্রাবস্তী রায়, প্রকল্পের টিম লিডার আতসুশি কইয়ামা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. রুহুল আমীন এবং জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার দীপংকর দত্ত।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জাকারিয়া বলেন, “সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে দুটি বিষয় জরুরি-যে খাদ্য গ্রহণ করব তা যেন নিরাপদ হয় এবং জীবনযাপনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়। এগুলো মানা না হলে চিকিৎসক যতই চেষ্টা করুন, সুস্বাস্থ্য পাওয়া সম্ভব নয়।”

তিনি আরও বলেন, “আগুন থেকে রক্ষা করে ফায়ার সার্ভিস নয়, বরং আমাদের নিজেদের সতর্কতা। তেমনি চিকিৎসা ব্যবস্থা বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পারে, কিন্তু নিজের স্বাস্থ্য সুরক্ষার দায়িত্ব সবার আগে আমাদেরই নিতে হবে।”

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে