খাগড়াছড়িতে মারমা কিশোরীর ধর্ষণের আলামত পাননি চিকিৎসকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ১ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:২৮ এএম
খাগড়াছড়িতে মারমা কিশোরীর ধর্ষণের আলামত পাননি চিকিৎসকরা

খাগড়াছড়িতে এক মারমা কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগকে ঘিরে কয়েকদিন ধরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে পার্বত্য চট্টগ্রামে। এ অভিযোগে অবরোধ, সহিংসতা, প্রাণহানি ও ১৪৪ ধারা জারির মতো পরিস্থিতি তৈরি হলেও চিকিৎসকদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিশোরী ধর্ষণের শিকার হননি।

খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের গাইনি কনসালটেন্ট জয়া চাকমার নেতৃত্বে তিন সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড পরীক্ষার পর জানিয়েছে, কিশোরীর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি এবং ধর্ষণের আলামতও মেলেনি। বোর্ডের অপর দুই সদস্য ছিলেন চিকিৎসক মোশাররফ হোসেন ও নাহিদা আক্তার। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদন জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়। খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ছাবের আহম্মেদও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, “ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। একটি গোষ্ঠী মিথ্যা অভিযোগ তুলে পুরো পার্বত্য অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করেছে।” তিনি এটিকে পরিকল্পিত আন্দোলন বলে উল্লেখ করেন।

প্রতিবেদন অনুসারে, অভিযোগ ছিল ২৩ সেপ্টেম্বর রাত ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়। ২৪ সেপ্টেম্বর সকালে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং ২৮ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন প্রস্তুত হয়।

এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়িতে অবরোধ কর্মসূচি ডাক দেয় ‘জুম্ম ছাত্র–জনতা’। রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) গুইমারার রামেসু বাজার এলাকায় সহিংসতায় জড়ায় অবরোধকারীরা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সংঘর্ষে তিনজন পাহাড়ি নিহত হন এবং সেনাবাহিনীর এক মেজরসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। নিহতরা হলেন—আথুই মারমা (২১), আথ্রাউ মারমা (২২) ও তৈইচিং মারমা (২০)।

জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানান, ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, অবরোধ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত সদর উপজেলা, পৌরসভা ও গুইমারায় জারি থাকা ১৪৪ ধারা বহাল থাকবে।

এদিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ঢাকেশ্বরী মন্দিরে শারদীয় দুর্গোৎসবের অষ্টমীতে বলেন, “কিছু সংখ্যক সন্ত্রাসী পূজা ব্যাহত করার চেষ্টা করেছিল। সন্ত্রাসীদের মদদদাতা দেশের বাইরে রয়েছে।” তিনি সহিংসতায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাগড়াছড়িতে সেনা, বিজিবি ও পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) থেকে কোনো নতুন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে