বেগমগঞ্জ ও সোনাইমুড়ী উপজেলায় বীর নিবাস এর কাজে অনিয়ম

এফএনএস (নাসির উদ্দিন মিরাজ; বেগমগঞ্জ, নোয়াখালী) :
| আপডেট: ২ অক্টোবর, ২০২৫, ০৭:০৮ পিএম | প্রকাশ: ২ অক্টোবর, ২০২৫, ০৭:০৫ পিএম
বেগমগঞ্জ ও সোনাইমুড়ী উপজেলায় বীর নিবাস এর কাজে অনিয়ম

বেগমগঞ্জ ও সোনাইমুড়ি  উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মিত বীর নিবাসের কাজে ধীরগতি, দুর্নীতি ও অনিমের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বেগমগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ ঘর বুঝে পাওয়ার আগেই বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে ঘর গুলোতে। 

এদিকে সোনাইমুড়িতে এখনো অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের বীর নিবাসের কাজে হাত দেয়নি অনেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

এদিকে বেগমগঞ্জ ও সোনাইমুড়ী উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মিত বীর নিবাস প্রকল্পের দেখ-বালের (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্বে রয়েছেন বেগমগঞ্জ উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। কর্মকর্তার অফিস সূত্র জানায়, মুক্তিযোদ্ধাদের বীর নিবাস এর জন্য ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বেগমগঞ্জ উপজেলায় ১৬৮ ও সোনাইমুড়ী উপজেলার ১০৬টি বীর নিবাস টেন্ডারে যায়। আর এই ঘরগুলো নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। বেগমগঞ্জ উপজেলায় ১৬৮ ঘর টেন্ডারে গেলেও অনেক জায়গায় এখনো বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। এদিকে সোনাইমুড়ীতে ১০৬ টি ঘর বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও অনেক ঘরের কাজ এখনো শুরু করা হয়নি। অথচ কাজ ধরার কথা আরো চার বছর আগে। 

বেগমগঞ্জ ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে জানা যায়, ঘর গুলো বুঝে পাওয়ার আগেই ছাদে  ফাটল, পলেস্তার খসে পড়া, নাম মাএ থাই ব্যবহার করা । এতে করে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে উপকারভোগীরা। অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদাররা বিভিন্নভাবে উপকার ভোগীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করেছেন,অনেকের কাছ থেকে ভাল কাজ করবে বলে সিমেন্ট, ক্যারিং খরচ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সোনাইমুড়ী উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের বীর নিবাস এর ১ প্যাকেজে ৮টি ঘর করার কথা  এম এন ট্রেডার্সের ঠিকাদার রনি। অধিকাংশ ঘরের কাজ এখনো ধরেনি। মুক্তিযোদ্ধা সাওার মেম্বার জানান, ভালো কাজ করবে বলে তার কাছ থেকে অনেক টাকা নিয়েছে। ধার বাবদ এক লক্ষ ৩০ হাজার টাকা নেওয়ার পরে ঠিকাদার রনি তার কাজ বন্ধ করে দেয়। এখন আর মিস্ত্রি  যায় না।ঠিকাদার ও ফোন ধরে না।

অম্বর নগর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম এর  স্ত্রী ফাতেমা ইসলাম জানান, সরকার আমাদের জন্য ঘর দিয়েছে শুনে খুশি হয়েছিলাম কিন্তু পাঁচ বছর অতিবাহিত হয়েছে এখনো আমার ঘরের কাজ ধরেনি। তিনি জানান তার স্বামী বেঁচে নেই, ছেলেও নেই, স্বামীর ভিটায় একটি ভাঙ্গা টিমের ঘর ছিল, তিন বছর আগে ঠিকাদার রনি কাজ করবে বলে ঘরটি সরিয়ে নিতে বলে। ঘরটি অন্যএে ১৫০০০ টাকা বিক্রি করে দেওয়া হয়। এখন তিনি মেয়ের জামাইদের বাসায়-বাসায় ঘুরে বেড়ানো লাগে।

কাজের মান ও ধীর গতি নিয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমান উল্ল্যাহ বলেন, সরকার পরিবর্তনের পরে অনেক ঠিকাদার গা ঢাকা দিয়েছে। তারা কাজ করতে রাজি নেই। আমরা মিটিং করে তাদের দ্রুত কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। সোনাইমুড়িতে বার অনিয়ম ও বীর নিবাসের কাজ না ধরার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভারপ্রাপ্ত হিসেবে আছেন। দায়িত্ব নিয়েছে মাএ একদিন। বিস্তারিত তেমন কিছু জানেন না। ভালোভাবে জানার পর বলতে পারবেন। 

বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আরিফুর রহমান বলেন, এগুলো অনেক আগের প্রকল্প। কিছু কিছু জায়গায় অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ হলেও আমাদের এখানে আগের বরাদ্দতেই কাজ করতে হচ্ছে। এই কারণে তারা গড়ি-মসি করছে।  দ্রুততম সময়ে বাকি ঘরগুলো শেষ করতে ঠিকাদারদের বলা হচ্ছে। 

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে