ময়মনসিংহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইসলাম ধর্ম ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে উসকানিমূলক মন্তব্য করায় আওয়ামী দোসর বিতর্কিত গ্রাফিক্স ডিজাইনার শামীম আশরাফকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। সোমবার রাত দশটার দিকে জেলা ডিবি পুলিমের একটি টিম নগরীর গোলকিবাড়ীর বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা ডিবি দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিদুল ইসলাম।
ওসি মহিদুল ইসলাম জানান, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রাতেই অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি তার সাথে ফ্যাসিস্টদের রাজনৈতিক যোগাযোগ সম্পর্কের বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। ধর্মীয় সংগঠনের নেতারা জানান, গ্রেফতারের সঙ্গে সঙ্গে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, সিম, ল্যাপটপ, কম্পিউটার ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস জব্দ করা উচিত যাতে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে তার হাত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা জরুরি। ডিভাইস জব্দ করে সেগুলোতে থাকা সকল অনলাইন যোগাযোগ, পোস্ট, মেসেজ ও কনটেন্ট তদন্ত করে উসকানিমূলক নেটওয়ার্কের সম্পূর্ণ চিত্র উদঘাটন করা হোক। তারা চান, শুধু গ্রেফতরেই নয়; তার পেছনের যাঁদের সঙ্গে যোগ আছে, তাদেরও শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হোক।
তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে সাইবার কমিউনিটির সভাপতি সাকিব আহমেদ তুহিন বলেন, ইসলাম ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, সোমবার সকালে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শামীম আশরাফের ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য ছড়িয়ে পড়ার পর শহরজুড়ে উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয় এবং সাধারণ মানুষ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে তাকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানায়।
শামীম আশরাফ দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় আওয়ামীপন্থি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় ছিলেন। গণ-অভ্যুত্থানের পরও তার মালিকানাধীন ‘গ্রাফিটি’ নামের ডিজাইন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্থানীয় আওয়ামী নেতাদের প্রচারণামূলক ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টার তৈরি করতেন ও পলাতক নেতাদের কাছে পাঠাতেন।
মামলার বাদি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ময়মনসিংহ মহানগরের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আরাফাত আনন্দিপুরী বলেন, “ধর্মপ্রাণ জনগণ জনস্বার্থে এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন; শামীম আশরাফকে গ্রেফতারের মাধ্যমে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা স্বস্তিবোধ করছে।”
শামীম আশরাফ বর্তমানে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানায় পুলিশ হেফাজতে রয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম।