দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আবারও জটিল আকার নিচ্ছে। মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে ৭১৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো দৈনিক ডেঙ্গু প্রতিবেদন অনুযায়ী, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ৪৫৮ জন পুরুষ এবং ২৫৭ জন নারী।
অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালে ভর্তি নতুন রোগীদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৩১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭০ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৪২ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৪১ জন, দক্ষিণ সিটিতে ১১৪ জন, খুলনা বিভাগে ৪১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩২ জন এবং রংপুর বিভাগে ১০ জন রোগী রয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন দুই হাজার ৫২০ জন ডেঙ্গু রোগী। এর মধ্যে ঢাকায় ৮৫৯ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ৬৬১ জন।
চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ৪০৪ জনে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২১৭ জনের। সর্বাধিক মৃত্যু ঘটেছে সেপ্টেম্বরে—সে মাসে প্রাণহানি ছিল ৭৬ জনের।
অক্টোবরের প্রথম সাত দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪ হাজার ৩৬২ জন; মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের।
অধিদপ্তর জানায়, সর্বশেষ দুই জন মৃত রোগী নারী ছিলেন। তাদের একজনের বয়স ৬০ বছর, তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে; অপরজনের বয়স ২৭ বছর, তিনি মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
ডেঙ্গু পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতি মাসে রোগী ভর্তি ও মৃত্যুর হার ওঠানামা করেছে। জানুয়ারিতে ভর্তি হয়েছিলেন ১ হাজার ১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন, মে মাসে ১ হাজার ৭৭৩ জন, জুনে ৫ হাজার ৯৫১ জন, জুলাইয়ে ১০ হাজার ৬৮৪ জন, অগাস্টে ১০ হাজার ৪৯৬ জন এবং সেপ্টেম্বরে ১৫ হাজার ৮৬৬ জন।
২০২৩ সালের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গু সংক্রমণ কম হলেও মৃত্যুহার এখনো উদ্বেগজনক। গত বছর (২০২৩) দেশে সর্বাধিক ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন এবং রেকর্ড ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষা শেষে বৃষ্টির অনিয়মিত ধারা এবং আবহাওয়ার উষ্ণতা মশার প্রজননের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করেছে, যা ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।