সুন্দরগঞ্জে অ্যানথ্র্যাক্সে আক্রান্ত আরও ৬ জন শনাক্ত

এফএনএস (মোঃ ইমদাদুল হক; সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা) :
| আপডেট: ৭ অক্টোবর, ২০২৫, ০৬:৫৯ পিএম | প্রকাশ: ৭ অক্টোবর, ২০২৫, ০৬:৫৯ পিএম
সুন্দরগঞ্জে অ্যানথ্র্যাক্সে আক্রান্ত আরও ৬ জন শনাক্ত

 গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সোমবার ও মঙ্গলবার দুইদিনে আ্যানথ্রাক্সে নতুন করে আরও ৬ জনসহ এ পর্যন্ত ২২ আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে রোজিনা বেগম নামের এক নারী অন্যান্য সমস্যাসহ আ্যানথ্রাক্স উপসর্গ নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। এখনও আতঙ্ক কাটেনি গরু মালিক ও এলাকাবাসির মাঝে।

            উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে,  গত ১ অক্টোবর হতে ৭ অক্টোবর মঙ্গলবার পর্যন্ত যারা চিকিৎসা নিয়েছেন, তারা হলেন- মধ্যে বেলকা গ্রামের সামিউল ইসলাম, সাহাদৎ হোসেন, সবুজ  মিয়া, বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আজিজল হক, পশ্চিম বেলকা গ্রামের ভূট্ট মিয়া, আতিকুর রহমান, শহিদুল ইসলাম,  বেলকা গ্রামের মোজাহার আলী, মোজাফ্ফর হোসেন, খতিব মিয়া, ফরিদুল হক, রুজিনা বেগম, কিসামত সদর গ্রামের মোজা মিয়া, মাহবুর রহমান, শাফিকুল ইসলাম, স্বাধীন মিয়া, সকিনা বেগম, তাইজল মিয়া, শিশু ছায়ফান বেগম, আফরিন বেগম, ছালদিয়া ইসলাম, ও রইসুল মিয়া।  এদের মধ্যে রুজিনা বেগম, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

           মঙ্গলবার সরেজমিন বেলকার কিশামত সদর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, তাদের কারো এক হাতে, কারো দুই হাতেই ফোসকা পড়েছে। এর মধ্যে শুধু মোজাফফর আলীর বাম চোখ মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়েছে। মোজাফফর আলী বলেন, 'গত ২৭ সেপ্টেম্বর অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত জবাই করা গরুর মাংস কাটাকাটিতে অংশ নিয়েছিলাম। এর দুইদিন পর বাম হাতে ও বাম চোখে ফোসকা দেখা দেয়। এ অবস্থায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। সেখানে ভর্তি হতে চাইলে, চিকিৎসক ওষুধ লিখে দিয়ে বিদায় করে দেন। কোন ওষূধ দেয় নাই। বাইর থেকে ওষুধ কিনে এনে খাচ্ছি এবং বাড়িতে আছি। প্রতিদিন ১০০ টাকার ওষুধ লাগছে। এরপর  শুক্রবার রংপুর থেকে গাইবান্ধার একটি ক্লিনিকে আসা চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ মনজুরুল করিমের কাছে যাই। বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে। এখন একটু সুস্থ।

         একই কথা বলেন, ওই গ্রামের নুরুন্নবী মিয়া ও নুর নাহার বেগম। তারা আরও বলেন, তাদেরপক্ষে এতোদামী ওষুধ কিনে খাওয়া সম্ভাব হচ্ছে না। ওষুধের দাম অনুয়ায়ী ২০ দিনের জন্য প্রায় ৩ হাজার টাকার ওষুধ লাগবে। সরকারি ভাবে ওষুধ সরবরাহের দাবি তাদের।

         উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দিবাকর বসাক বলেন,  অ্যানথ্রাক্স উপসর্গ নিয়ে যারা চিকিৎসা নিতে এসছিল, তাদের মধ্যে কেউ গুরুত্বর ছিল না। বেশিভাগ রোগি রাতে এসেছিল, সে কারনে তাদেরকে ওষুধ দেয়া সম্ভাব হয়নি। গত দুই দিনে ( সোমবার ও মঙ্গলবার) নতুন করে  আরও ৬ জন চিকিৎসা নিয়ে গেছেন। এনিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৬ জনের চিকিৎসা দেয়া হল। রোগিদেরকে  ১০ দিনের এন্টিবায়োটিক লিখে দেয়া হচ্ছে। অন্য কোন সমস্যা না থাকলে ১৫ হতে ২০ দিনের মধ্যে সুস্থ হওয়ার কথা। তিনি আরও বলেন, উপজেলায় একটি মেডিকেল টিম কাজ করছে। 

         উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার দে বলেন, গরু-ছাগলকে অ্যানথ্রাক্স রোগের ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। সচেতনতায় উঠোন বৈঠক, মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। এটি কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। পরীক্ষা করে দুইটি গরুর মধ্যে অ্যানথ্রাক্সের রোগের জীবানু পাওয়া গেছে। ৬টি মনিটরিং টিম সার্বক্ষনিক মাঠে কাজ করছেন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে