গাংনীতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত, শিক্ষক পলাতক

এফএনএস (ফারুক আহমেদ; মেহেরপুর) : | প্রকাশ: ৮ অক্টোবর, ২০২৫, ০৪:৪৬ পিএম
গাংনীতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত, শিক্ষক পলাতক

মেহেরপুরের গাংনীতে কবুতর চুরির অভিযোগ তুলে হেফজ বিভাগের জুনায়েদ আহমেদ(১৩) নামের এক শিক্ষার্থীকে  পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে গাংনী মালসাদহ গ্রামের  ফজলুল উলুম ক্বওমী মাদ্রাসার হুজুর শিক্ষক মোঃ জুবায়ের আহমেদের বিরুদ্ধে৷ মঙ্গলবার রাত আনিমানিক ১১ টার দিকে ঐ শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করে আহত করা হয়। জুনায়েদ আহমেদ ওই মাদ্রাসায় হেফজ নাজেরা বিভাগের ছাত্র। সে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পার গোয়াল গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে। এদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত হুজুর শিক্ষক  পলাতক রয়েছেন। 

স্থানীয়রা জানান, মারধরের কারণে শিশুটি  অসুস্থ হলেও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়নি। পরে পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে বুধবার সকালে আহত জুনায়েদ আহমেদকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।অসুস্থ হওয়া সত্বেও হাসপাতলে না নেওয়ায়  চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়,শিক্ষার্থী ও অভিভাবক।

জুনায়েদ আহমেদ এর ছোট চাচা আয়নাল হক বলেন, আমার ভাই এক বছর দুই মাস হল মারা গেছে।এরপর থেকে তাকে অনেক কষ্টে লালন পালন করছি।তার লেখাপড়ার কিছু খরচ আমাকেও দেয়া লাগে।জুনায়েদ আহমেদকে গাংনী পৌর এলাকার পশ্চিম মালসাদহ গ্রামের ফজলুল উলুম কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি করানো হয়। প্রায় সাত বছর যাবত সেখানেই লেখাপড়া করছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে মাদ্রাসার পাশের কোন এক ব্যক্তি মোবাইল ফোনে জানান মাদ্রাসার হুজুর জুবায়ের আহমেদকে কবুতর চুরির অপবাদ দিয়ে বেধড়ক পিটিয়েছে। সকালে মাদ্রাসায় এসে জানতে পারি তার ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে।এতটুকু ছেলেকে এভাবে হুজুর মেরেছে দেখে খুব কষ্ট লাগছে।

আহত জুনায়েদ আহমেদ এর মা রিমা খাতুন বলেন,  কবুতর চুরির অপবাদ দিয়ে আমার ছেলের শরীরে যেভাবে বেত্রাঘাত করা হয়েছে তা একজন মা হিসেবে সহ্য করা কঠিন।হুজুর মেরে আহত করেও পরিবারের কাউকে খবর দেয়নি,চিকিৎসাও দেইনি।পরে আমরা জানতে পেরে সকালে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।আমি অভিযুক্ত জুবায়ের আহমেদ শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।আমার ছেলের  পিঠে, বাম পায়ের উরু ও বাম হাতের একটি আঙ্গুলে জখম সহ শরীরের প্রায় ২৫ জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।এ বিষয়ে আইনের আশ্রয় নেবেন বলেও জানান তিনি। 

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মো: আব্দুল্লাহ আল আজিজ জানান, বুধবার সকালে  বেত্রাঘাতে আহত অবস্থায় জুনায়েদ আহমেদ নামের এক শিশুকে পরিবারের সদস্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। শিশুটির শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

এ বিষয়ে মাদ্রাসার সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান সেন্টু জানান, তাৎক্ষণিক জানতে পেরে তার ক্লাস স্থগিত করেছি।আজ রাতে মিটিং করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গাংনী থানার ওসি(তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এ ঘটনায় এখনো কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে