বান্দরবানে সোমবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ৯ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:২৬ পিএম
বান্দরবানে সোমবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক

পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি) আগামী সোমবার (১৩ অক্টোবর) বান্দরবানে সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতাল পালনের ঘোষণা দিয়েছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দীর্ঘদিনের বৈষম্য ও সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার প্রতিবাদে এবং ৮ দফা দাবির বাস্তবায়নের দাবিতে এই কর্মসূচি আহ্বান করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে বান্দরবান সদরের হোটেল গ্র্যান্ড ভ্যালির সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মো. মজিবর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামে আমরা বাঙালি সম্প্রদায় যুগের পর যুগ ধরে বিভিন্ন ধরনের বৈষম্যের শিকার এবং সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। তাই ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য আমাদের এই হরতাল কর্মসূচি।”

তিনি আরও জানান, কলেজ, সরকারি অফিস-আদালত, সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, খাবারের দোকান, ওষুধের দোকান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদ সরবরাহের গাড়ি ও পরীক্ষার্থীদের যানবাহন হরতালের আওতামুক্ত থাকবে।

৮ দফা দাবি


হরতাল কর্মসূচিতে পিসিএনপি যে দাবিগুলো তুলেছে, তার মধ্যে রয়েছে—

১। পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ১৯০০ বাতিল করে সংবিধানের আলোকে তিন পার্বত্য জেলার শাসনব্যবস্থা চালু করা।

২️। রাজার সনদ বাতিল করে জমি ক্রয়-বিক্রয়, চাকরি ও শিক্ষায় সমান সুযোগ নিশ্চিত করা।

৩️। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে ভূমি ব্যবস্থাপনা চালু করা।

৪️। বাজার ফান্ড প্লটের লিজ মেয়াদ ৯৯ বছরে উন্নীত করা এবং বন্ধ থাকা ব্যাংক ঋণ পুনরায় চালু করা।

৫️। পরিবেশবান্ধব ইটভাটা ও শিল্প কারখানা স্থাপন করে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি।

৬️। প্রত্যাহারকৃত ২৪৬টি সেনা ক্যাম্প পুনঃস্থাপন করে নিরাপত্তা জোরদার করা।

৭️। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস দমন করে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা।

৮️। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা ও চাকরিক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করে ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করা।


কাজী মজিবর রহমান বলেন, “আমরা চাই পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ যেন অন্য জেলার মতোই সমান অধিকার ভোগ করতে পারে। যদি এসব দাবি পূরণ না হয়, ভবিষ্যতে এই আন্দোলন আরও তীব্র করা হবে। প্রয়োজনে তিন পার্বত্য জেলায় একযোগে হরতাল ও জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হবে।”


সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মো. শাহজালাল, বান্দরবান জেলা সভাপতি মাওলানা আবুল কালাম, সাধারণ সম্পাদক মো. নাছির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আবছার এবং স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে