বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা নিয়ে গবেষণায় অগ্রদূত অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, দেশ একজন সৎ, প্রজ্ঞাবান ও নিবেদিতপ্রাণ গবেষককে হারিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বাংলাদেশের স্থানীয় সরকারব্যবস্থা নিয়ে গবেষণার পথিকৃৎ ছিলেন। তিনি ২০২৪ সালে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন করা স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার গঠনমূলক ও বাস্তবসম্মত প্রস্তাবনা স্থানীয় সরকারব্যবস্থার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ড. ইউনূস আরও বলেন, “অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ ছিলেন স্থানীয় সরকার ও সমবায় বিষয়ক লব্ধপ্রতিষ্ঠ গবেষক ও লেখক। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ, জবাবদিহিমূলক স্থানীয় সরকার ও গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠায় তার কাজ ছিল যুগান্তকারী।”
তিনি উল্লেখ করেন, “বাংলা ও ইংরেজি মিলিয়ে তার লেখা প্রায় ২০টি গ্রন্থ এবং দেশি–বিদেশি জার্নাল ও পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত অসংখ্য প্রবন্ধ বাংলাদেশের জ্ঞানচর্চাকে সমৃদ্ধ করেছে। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ছিলেন এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)-এর স্থানীয় শাসন উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।”
প্রধান উপদেষ্টা মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবার, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ী সকলের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
বুধবার (৮ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ। তার জামাতা লেফটেন্যান্ট কর্নেল সরোয়ার জাহান গণমাধ্যমকে জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরীক্ষায় তার হৃদ্যন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে এবং তিনি ফুসফুসের সংক্রমণেও ভুগছিলেন। বুধবার বিকেলে রিং পরানোর জন্য অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতিকালে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ ১৯৫৪ সালের ১ মার্চ চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফতেহপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ফতেহাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিএ ও এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে যুক্তরাজ্যের সোয়ানসি ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলস থেকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্টাডিজে এমএসসি (অর্থনীতি) এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।