রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ সংক্রান্ত কথোপকথনের ফাঁস হওয়া অডিওটি ‘আসল’ বলে নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ফরেনসিক সাইকোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস (বিআইএফপিএস)। সম্প্রতি ওই বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মীর মেহবুব আলম দাবি করেছিলেন, তাঁর কণ্ঠ ব্যবহার করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে রেকর্ডটি তৈরি করা হয়েছে। তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) থিয়েটার অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (আরইউটিএএ) সভাপতি মো. হোসাইন মারুফের আবেদনের পর বিআইএফপিএস যে পরীক্ষাটি করে, তাতে প্রমাণ মেলে অডিওটি সম্পূর্ণ আসল এবং এতে কোনো সম্পাদনা বা বিকৃতি হয়নি। বিআইএফপিএসের পরীক্ষার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রেকর্ডের মেটা ডেটা অ্যানালাইসিসে কোনো রি-এনকোডিং বা পরিবর্তনের চিহ্ন নেই। ভয়েসের ফরম্যান্ট, পিচ, জিটার ও শিমার প্রাকৃতিক মানবকণ্ঠের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, স্পেকট্রোগ্রাম বিশ্লেষণেও কোনো এআই জেনারেটেড শব্দচিহ্ন পাওয়া যায়নি। রেফারেন্স ভয়েসের সঙ্গেও উচ্চমাত্রার মিল পাওয়া গেছে। অডিওর অন্যপ্রান্তে রয়েছেন নাট্যকলা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাহাত ইসলাম (হৃদয়), যিনি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। স্নাতকে ৩.৬৩ ও স্নাতকোত্তরে ৩.৮৬ সিজিপিএ পেয়ে তিনি উভয় পর্যায়ে প্রথম হয়েছিলেন। গত ১৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন রাহাত, তবে ভাইভায় ডাকা হয়নি। তাঁর অভিযোগ, নিয়োগের আগে টাকার দাবি করা হয়েছিল; তিনি দিতে না চাওয়ায় তাঁকে মৌখিক পরীক্ষায় রাখা হয়নি। এ নিয়ে তিনি ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন এবং অডিও রেকর্ডসহ বিষয়টি শিক্ষা উপদেষ্টা, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠান। রাহাত অভিযোগ করেন, নিয়োগ বোর্ডে প্রথমে রাখা বিশেষজ্ঞকে পরিবর্তন করা হয় এবং নির্দিষ্ট প্রার্থীদের সুবিধা দিতে প্রশ্নপত্রও আগেই সরবরাহ করা হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। যাচাই-বাছাই শেষে প্রমাণ মিললে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।