মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে প্রতিবেশীর লাঠীর আঘাতে গুরুতর আহত এক যুবক বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। আহত যুবকের নাম নাইম শেখ (২৫)। সে উপজেলার উত্তর কামারগাঁও গ্রামের মো. রতন শেখের পুত্র। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকাল ১০.৩০ ঘটিকায় শ্রীনগর উপজেলার উত্তর কামারগাঁও এলাকায়।
এই ব্যাপারে আহত যুবক নাইম শেখের মামা আব্দুল কাদির পিতা- মৃত আবুল কাশেম বাদী হয়ে হারুন শেখ (৬০) পিতা-মৃত শেখ আমজাদকে প্রধান আসামীসহ ৬ জনকে বিবাদী করে ১১ অক্টোবর রাতে শ্রীনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করছেন। শ্রীনগর থানা মামলা নং ১৯ তারিখ- ১১/১০/২০২৫।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রতিবেশী বিবাদী হারুন শেখ এর সাথে তাহার ছোট ভাই প্রবাসী মোঃ লিটন শেখ (৩৯) এর বসত বাড়ীর জায়গা নিয়া বিরোধ আছে। বিবাদীর ছোট ভাই মোঃ লিটন শেখ সৌদি আরবে কাজ করার সময় দূর্ঘটনা জনিত কারনে পায়ের হাড়ভেঙ্গে যাওয়ার কারনে বিগত অনুমান ০১ মাস আগে প্রবাস থেকে দেশে চলে আসে। মোঃ লিটন শেখ এর পা ভাঙ্গার কারনে বিভিন্ন সময়ে তাহার বসত ঘরের সামনে মাটির ডিভি (ওটা/সিড়ি) দিয়ে ওঠানামার সময় বেশ কয়েকবার পড়ে গিয়ে সামান্য আহত হওয়ার কারনে চলাচলের সুবিদার্থে ১০ অক্টোবর শুক্রবার সকাল অনুমান ০৮.৩০ ঘটিকার সময় মোঃ লিটন শেখ তার বসত ঘরে ওঠানামার জন্য ঘরের সামনে পাঁকা সিড়ি তৈরির চেষ্টাকালে বিবাদী হারুন শেখসহ অন্যান্যরা তার ভাই মোঃ লিটন শেখকে সিড়ি তৈরিতে বাধা নিষেধ জানায়। ইহাতে বিবাদীদের সাথে মোঃ লিটন শেখ এবং তার স্ত্রী নাসিমা বেগম (৩০) দ্বয়ের তর্কবিতর্ক ও মারমুখী পরিবেশের সৃষ্টি হইলে শোরগোল শুনে পার্শ্ববর্তী নাইম শেখ (২৫), পিতা- রতন শেখ ১০.৩০ ঘটিকার সময় বিবাদীদেরকে নিবৃত করতে মোঃ লিটন শেখ এর বসত ঘরের সামনে এগিয়ে গেলে নাইম শেখের অনুরোধ না শুনিয়া বিবাদী হারুন শেখ এর হুকুমে উক্ত বিবাদী সহ অন্যান্যরা নাইম শেখকে এলোপাথাড়ী কিলঘুষি ও লাথি মারিয়া তাহার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে। এক পর্যায়ে বিবাদী হারুন শেখ তার হাতে থাকা কাঠের ডাসা দিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে নাইম শেখের মাথায় আঘাত করিয়া মাথার তালুতে গুরুতর রক্তাক্ত ফাটা জখম করে। এসময় নাইম শেখ মাটিতে লুটাইয়া পড়িলে বিবাদীরা আহত নাইম শেখ ও মোঃ লিটন শেখে এবং তার স্ত্রীকে খুন জখমের হুমকী দেয়। ঘটনার পর মোঃ লিটন শেখ এবং তার স্ত্রীর ডাক চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন আগাইয়া আসে এবং আহত নাইমকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখিয়া তাকে উদ্ধার করে দ্রুত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়া গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন। পরবর্তীতে তার মামাসহ নিকট আত্মীয় স্বজন উক্ত হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পপুলার হাসাপাতাল, ধানমন্ডিতে নিয়া চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় নাইম শেখ বর্তমানে পপুলার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহত যুবকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
মামলার অন্যান্য আসামীগন হলো- বিবাদী ১। হারুন শেখ (৬০), পিতা- মৃত শেখ আমজাদ, ২। নাঈম শেখ (২৬), ৩। নাহিদ শেখ (২০), উভয় পিতা- হারুন শেখ, ৪। মোসাঃ নাসিমা বেগম (৫০), স্বামী- হারুন শেখ, ৫। মোসাঃ হামিদা আক্তার (৩২), পিতা- হারুন শেখ, স্বামী-তাজেল শেখ, ৬। মৌসুমী আক্তার (২৮), পিতা- হারুন শেখ, স্বামী- মোঃ আশিক, সর্ব সাং- উত্তর কামারগাঁও (শেখবাড়ী), থানা- শ্রীনগর, জেলা- মুন্সীগঞ্জ।
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নাজমুল হুদা খান।