দর্শক শুণ্যতায় নিভে যেতে পারে সৈয়দপুর তামান্না সিনেমা হল

এফএনএস (ওবায়দুল ইসলাম; সৈয়দপুর, নীলফামারী) : | প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর, ২০২৫, ০৬:০০ পিএম
দর্শক শুণ্যতায় নিভে যেতে পারে সৈয়দপুর তামান্না সিনেমা হল

নীলফামারীর সৈয়দপুর তামান্না সিনেমা হল যে কোন সময় নিভে যেতে পারে। দর্শক শুণ্যতার কারণে বন্ধ হতে পারে সিনেমা হলটি। তামান্না সিনেমা হলের পরিচালক মোঃ মাহবুব আলম ঝন্টু জানান,আর পারছি না হল চালাতে। কত আর লোকসান গুনবো। ছোট বেলা থেকে আমি ছিলাম সাংস্কৃতি মনা। তাই চাকরির পাশাপাশি বিভিন্ন হল ভাড়ায় নিয়ে পরিচালনা করতাম। তবে সে সময়টা ছিল হল ভর্তি দর্শক। ছবি কেমন হয় হোক হলে আসতো দর্শক। লোকসান কি জিনিস তা অনুভব করিনি। তখনকার মানুষ ছায়াছবি দেখতো। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে উচ্চ শিক্ষিতরাও হলে আসতো। কিন্তু এখন আর মানুষ ছবি দেখতে আসে না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইস বুক এখন অত্যন্ত জনপ্রিয়। নারী পুরুষ সবার হাতে এখন মোবাইল। হাতের মুঠোয় এখন পৃথিবী। 

নীলফামারী জেলার বেশ কয়েকটি সিনেমা হল আমি পরিচালনা করেছি। দর্শক হল থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার পর লোকসানের একটা বিগ এমাউন্ড মাথায় চেপে যায়। ফলে একটি হল রেখে সবগুলো ছেড়ে দেই।

বর্তমানে লোকসানের বড় একটা বোঝা মাথায় নিয়ে হলটি পরিচালনা করে আসছি। বিদ্যুৎ বিল, পৌরসভার কর,সরকারি ভ্যাট,ট্যাক্স,হল ভাড়া, জেনারেটর ভাড়া,প্রচার ভাড়া,ছবি নিয়ে আসা,কর্মচারীর বেতন,সব মিলিয়ে প্রতিমাসে কয়েক লাখ টাকা ব্যয়। কিন্তু শতচেষ্টা করেও ওই টাকা আসে না। ছবি মালিকরা অগ্রিম টাকা নিয়ে ছবি পাঠায়। আর লোকসান নিয়ে হল চালাতে হয় আমাদেরকে। সরকারি কোন প্রকার সুযোগ সুবিধা আমরা পাই না। হয়তো খুব দ্রুত সময়ে হলটি ছেড়ে দেব।

রোববার সিনেমা হলে গিয়ে দেখা যায়,প্রথম শ্রেণিতে দর্শক তিনজন। দ্বিতীয় শ্রেণিতে নেই। তৃতীয় শ্রেণিতে একজন। কাল্টু নামে এক লোক দাঁড়িয়ে আছে হল চত্বরে। জিজ্ঞাস করা হলে জানায়,ছবি দেখতে এসেছি।

কিন্তু দর্শক না থাকায় দেখতে মন চাইছে না। কারণ জানতে চাইলে বলেন,হলে দর্শক থাকলে হাসি আনন্দে ছবিটি উপভোগ করা যায়। আর দর্শক না থাকলে জমে না। একা একা বসে থাকতে মন চায় না। 

তামান্না হলের অপারেটর বাপ্পি বলেন,আমি প্রায় ১০ বছর থেকে ছবি প্রদর্শন করে থাকি। দেশের বিভিন্ন হলে কাজ করেছি। দর্শক হলে থাকলে আমাকেও ভাল লাগে। কারণ মাঝে মাঝে লাইন যেত। পর্দায় ছবি হঠাৎ বন্ধ হত। আর ঠিক ওই সময় দর্শক চিৎকার করতো,গালি দিত, গান গাইতো, দর্শকের এ আচরণগুলো খুব ভাল লাগতো। আজ দর্শক নেই,গালি নেই,হাত তালি নেই। মনটা খুবই খারাপ। তিনিও এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাবেন। 

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে