দীর্ঘ ৩৬ বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আজ, বুধবার (১৫ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হচ্ছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন। শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি নির্বাচনের এ আয়োজন ঘিরে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এখন উৎসবের আমেজে ভাসছে। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বেছে নেবেন কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদের প্রতিনিধি।
ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন, সমাজবিজ্ঞান, বিজ্ঞান, কলা ও মানববিদ্যা এবং প্রকৌশল অনুষদের ভবনে মোট ১৫টি কেন্দ্রে। এসব কেন্দ্রে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩০০টি স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও ৭০০টি গোপন বুথ। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য চাকসু ভবনে আলাদা ভোটকেন্দ্রও রাখা হয়েছে।
নির্বাচন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ক্যাম্পাসে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ, র্যাব, এপিবিএন, বিজিবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বাহিনী, রোভার স্কাউট ও বিএনসিসি মিলিয়ে প্রায় ১ হাজার ৭০০ সদস্য। টহল দিচ্ছে সাদা পোশাকের গোয়েন্দা সদস্যরাও। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে পাঁচ অনুষদে দায়িত্ব পালন করছেন পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং মাঠে রয়েছে একাধিক মোবাইল কোর্ট।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন জানিয়েছেন, ভোটগ্রহণ হবে ব্যালট পেপারে এবং গণনা করা হবে ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রিডার) পদ্ধতিতে। তিনি বলেন, “আমরা চাই, ভোট যেন দ্রুত ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়। এজন্য গণনায় আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে।”
চাকসু নির্বাচনে এবার প্রার্থী হয়েছেন মোট ৯০৮ জন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদের ২৬টি পদে লড়ছেন ৪১৫ জন এবং ১৪টি হল সংসদে ৪৭৩ জন প্রার্থী। কেন্দ্রীয় সংসদে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ২৪ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ২২ জন, সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২১ জনসহ বিভিন্ন পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শতাধিক শিক্ষার্থী।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৫১৮ জন, এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৬ হাজার ১৮৯ জন এবং নারী ভোটার ১১ হাজার ৩২৯ জন। প্রকৌশল অনুষদে ৪ হাজার ৩৬ জন, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদে ৫ হাজার ২৬৩ জন, বিজ্ঞান অনুষদে ৪ হাজার ৫৩৮ জন, সমাজবিজ্ঞান অনুষদে ৬ হাজার ৬০৬ জন এবং ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে ৭ হাজার ৭৩ জন ভোট দেবেন।
১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯০ সালে। দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছে উৎসবের উচ্ছ্বাস, পাশাপাশি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের প্রত্যাশা।