আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে

তানোরে কৃষি মাটির উপরের স্তর কেটে তিন ফসলি জমি ভরাট

মো: ইমরান হোসাইন; তানোর, রাজশাহী | প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর, ২০২৫, ০৬:২৫ পিএম
তানোরে কৃষি মাটির উপরের স্তর কেটে তিন ফসলি জমি ভরাট
রাজশাহীর তানোরে প্রশাসনের অনুমতি ব্যতিত তিন ফসলি জমির মাটি কেটে আবাদী জমি ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ প্রস্তুতির অভিযোগ উঠেছে। বিগত এক সপ্তা ধরে স্থানীয় আ.লীগের সক্রীয় কর্মী পলাশ আলী প্রায় ৪২ শতক উর্বর জমির (টপসয়েল) মাটির উপরের স্তর কেটে কৃষিজমি ভরাট করেছেন। জানা গেছে, ওই ফসলি জমিটি পলাশের স্ত্রী উপজেলার বাধাইড় ইউপির ঝিনাখৈর স্কুলের শিক্ষক নাজনিন খাতুনের নামে রেকর্ডভুক্ত। তার বাড়ি ঝিনাখৈর গ্রামে। তিনি ৩ ফসলি জমির মাটি কেটে আবাদী জমি ভরাট করছেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়া হয়নি। পুলিশে চাকুরি করার সুবাদে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এমন কাজ করা হচ্ছে। ফলে আশেপাশের কৃষি জমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে এবং জমির শ্রেণি পরিবর্তনের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এটা ঠেকানো না হলে তার দেখাদেখি অন্যরাও কৃষি জমির মাটি কাটতে উৎসাহিত হবে মানুষ। এভাবে কৃষি জমি নষ্ট হলে একদিকে খাদ্য উৎপাদন কমে যাবে, অন্যদিকে পরিবেশের ভারসাম্যও নষ্ট হবে। স্থানীয়রা দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এসম্পর্কে এক আইনজীবি বলেন- কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন বা উর্বর মাটি কেটে অন্য কাজে ব্যবহার করা ‘কৃষিজমি রক্ষা ও ব্যবহার আইন ২০২৪’ অনুযায়ী একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। আইনের ৪ (১) ধারা অনুসারে কোনো ব্যক্তি সরকার বা কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন ও মাটি কর্তন বা ভরাট করতে পারবে না। আইনের ৮(১) ধারা অনুযায়ী এই আইনের বিধান লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ২ (দুই) বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে। তবে, এবিষয়ে পলাশ আলী বলেন- তার ভাই পুলিশের চাকরি করে। মূলত সেই ফসলি জমি ভরাট করতে বলেছে। বিষয়টি সেই দেখছে। তার নির্দেশনা থাকায় আমরা প্রশাসনের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করিনি বলে দম্ভোক্তি দেখান তিনি। এনিয়ে তার ভাই আব্দুর রহমানের নিকট যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। শিক্ষক নাজনিন খাতুন বলেন- আমরা জানতাম শুধু পুকুর খনন করতে প্রশাসনের অনুমতি লাগে। জমি উঁচু করতে অনুমতির প্রয়োজন হয় এটা আমরা জানতাম বলে এড়িয়ে গেছেন তিনি। এবিষয়ে উপজেলার মুন্ডুমালা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ইকবাল কাশেম জানান, ফসলি জমি ভরাট কার্যক্রম বন্ধ করে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্মকর্তাকে অবগত করে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। এনিয়ে তানোর থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন। এমন ঘটনা ঘটানো হলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ওসি। এব্যাপারে সহকারী কমিশনার ভূমি’র অতিরিক্ত দায়িত্বরত তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাইমা খান বলেন- উর্বর তিন ফসলি জমির মাটি কেটে আবাদী জমি ভরাটের সুযোগ নেই। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ই/তা
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে