সবজির বাজার চড়া: জনগণকে স্বস্তি দিন

এফএনএস
| আপডেট: ১৭ অক্টোবর, ২০২৫, ০৩:৫৬ এএম | প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর, ২০২৫, ০৩:৫৬ এএম
সবজির বাজার চড়া: জনগণকে স্বস্তি দিন

ঝোপ বুঝে কোপ মারা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের পুরোনো খেলা। বিশেষ করে নিত্যপণ্য নিয়ে এটি বারবার হয়ে আসছে। সামান্য বৃষ্টির ফোঁটা, উৎসবের ছুটি কিংবা আমদানির বিলম্ব-যে কোনো অজুহাতেই অসাধু ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে সিন্ডিকেট করে দাম আকাশচুম্বী করে দেন। আর তা যেন নিত্যদিনের চিত্র হয়ে উঠেছে। রাজধানীর বাজারে সবজির দাম এখন আকাশছোঁয়া। হাতেগোনা কয়েকটি সবজি ছাড়া বেশির ভাগের দাম কেজিপ্রতি শতের ঘরে। কৃষক থেকে রাজধানীর খুচরা বাজারে পৌঁছাতে সবজির দাম বেড়ে প্রায় চারগুণ হয়ে যাচ্ছে। শীতের কিছু আগাম সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। অথচ দেশের অন্যতম বড়ো মোকাম বগুড়ার মহাস্থান বাজারে কৃষকদের কাছ থেকে স্বল্প দামে কেনা হচ্ছে এসব সবজি। অত্যধিক দামের কারণে ক্রেতারা তাদের আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব মেলাতে পারছে না। বেশি দামে সবজি কিনতে গিয়ে অস্বস্তি নিয়ে সাধারণ মানুষ বলছেন, বর্তমানে বাজারে মোটামুটি সব জিনিসের দামই বেশি। বিশেষ করে সবজির দাম। আগে ১ হাজার টাকার বাজার করলে সাধারণ মানুষের এক সপ্তাহ চলে যেত। এখন দেড় হাজার টাকায়ও সপ্তাহ পার হতে চায় না। ভারি বৃষ্টি ও সরবরাহ কম থাকার কারণে কিছু দিন আগেও যে সবজি ছিল ৭০-৮০ টাকা কেজি, এখন তা ১২০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এরকম কয়েক পদের সবজি কিনতেই ৩০০ টাকা শেষ হয়ে যায়। সম্প্রতি কাঁচামরিচ নিয়ে তেলেসমাতি করেছেন ব্যবসায়ীরা। দেশের বিভিন্ন জেলায় চাষ হওয়া কাঁচামরিচ ১২০ থেকে সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা দরে কিনে ঢাকায় এনে দাম হাঁকিয়েছেন ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি। টানা বৃষ্টির বাহানায় নিজেদের পকেট ভারী করেছেন ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে, প্রান্তিক কৃষকদের কাঁধে লোকসানের ভারটা নিতে হয়। তাদের মুনাফা খেয়ে ফেলে সিন্ডিকেট চক্র। দেশের যে-সব জেলায় কাঁচামরিচ চাষ হয়-এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বগুড়া, গাইবান্ধা এবং রংপুর অন্যতম। এ ছাড়া আরও কিছু জেলায় অল্প পরিমাণে কাঁচামরিচের চাষ হয়। দেশের এসব জেলায় কাঁচামরিচ কয়েক দিন আগে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ২০০ টাকা দরে, যা সাধারণত আরও কম দাম থাকে। কিন্তু এই মরিচ ঢাকায় আসতে আসতে দাম বেড়ে দিনের ব্যবধানে হয়ে যায় ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা। মূলত আমদানি বন্ধ, বৃষ্টি আর পচনশীল পণ্য-এসব কথা বলে দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। ফলে দিন শেষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বাধ্য ক্রেতারা বাড়তি দাম দিয়েই কেনেন। আমরা মনে করি, আমাদের দেশের সরবরাহ ও বাজার-ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার সুযোগে ব্যবসায়ীরা এর ফায়দা তুলতে কোনো কসুর করেন না। তাই পণ্যের দাম আকাশ-পাতাল ওঠানামা বন্ধে এর স্থায়ী সমাধানে চাই টেকসই বাজার-ব্যবস্থাপনা ও সরবরাহ-ব্যবস্থায় মনোযোগী হওয়া। তবে তাৎক্ষণিক ফায়দা পেতে বাজারে কঠোর নজরদারি বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।