মেহেরপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী এখন ইসলামকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে জাতির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে। তারা ধর্মের নামে প্রতারণা করছে, অথচ ইসলামের মূল চেতনা ধ্বংস করছে। ইসলাম শান্তির ধর্ম এই ধর্মকে ব্যবহার করে যারা রাজনীতি করে, তারা প্রকৃত অর্থে ইসলাম ও জাতির শত্রু। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে দিনব্যাপী গণসংযোগ শেষে আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, কঠিন সময়ে আজ যারা ধর্মের ব্যবসা করে রাজনীতি করছে, তাদের কাউকে রাজপথে দেখা যায়নি। তারা শুধু নিজেদের স্বার্থে ইসলামকে ব্যবহার করে।বিএনপি আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছি। আজকে বাংলাদেশে যারা ইসলামের নামে বিভাজন সৃষ্টি করছে, তারা ইসলামের নয়, নিজেদের ক্ষমতার রাজনীতি করছে। ইসলাম কোনো বিভাজন শেখায় না, বরং ঐক্যের কথা বলে। কিন্তু জামায়াত আজ সেই ঐক্যের জায়গায় বিভাজন সৃষ্টি করছে। তারা মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।
গত ১৭ বছর আমি রাজপথে আছি। আন্দোলনের জন্য ১৯টি মামলার আসামি হয়েছি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য লড়েছি। কিন্তু কিছু মানুষ এখন ধর্মকে ঢাল বানিয়ে রাজনীতি করছে। তারা মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে বলে, ‘আমাদের ভোট দিন, জান্নাতে যাবেন। ইসলাম কখনো মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় দেয় না। অথচ তারা ধর্মের নামে রাজনীতি করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের রাজনীতি করছি। মানুষের ভোট ও কথা বলার অধিকার আমরাই প্রতিষ্ঠিত করেছি, ছাত্ররাই করেছে। বাংলাদেশে জনগণের যে ভোটের অধিকার রয়েছে, সেটি প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি রাজপথে আন্দোলন করছে। আমরা চাই, সামনের দিনে যার ভোট তার দেওয়ার অধিকার ফিরে আসুক। আমাদের দলের মূল লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের পাশে থাকা। আমরা রাজপথে আছি, জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য লড়ছি। বিএনপিকে আবারও সুসংগঠিত করে মাঠে নামানোর নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আমাদের লক্ষ্য স্পষ্ট—ধানের শীষকে বিজয়ী করে সংসদে পাঠানো এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা।
তিনি আরো বলেন, যারা আজ ইসলামকে ধ্বংস করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়, তারা ইতিহাসে একদিন দাগ রেখে যাবে। বাংলাদেশের মানুষ খুব ভালো করেই জানে, ইসলাম রক্ষার লড়াই কখনো ভণ্ডামির মধ্যে হয় না। ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা ইসলামবিরোধী কাজ।
আমরা চাই, বাংলাদেশে জনগণের সরকার গঠিত হোক, মানুষ যেন স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারে। দেশের মানুষ আজ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত। এই অবস্থা পরিবর্তন করতে হলে আন্দোলন-সংগ্রামের বিকল্প নেই। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা সেই আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
গণসংযোগ চলাকালে স্থানীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দলীয় মতাদর্শে পার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু বিএনপি পরিবারের মধ্যে বিভাজন কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করলে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করা সম্ভব। আমাদের ত্যাগ, সাহস ও সততা দিয়ে জনগণের আস্থা ফিরে পেতে হবে।
গণসংযোগ কর্মসূচিতে প্রায় ৩ শতাধিক মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি মটমুড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে শেষ হয় শুকুরকান্দি বাজারে। গণসংযোগে হাজারো নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। এ সময় বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।