ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে বেহাল পাঁচ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক। উপজেলার শাহবাজপুর ও শাহ্জাদাপুর ইউনিয়নের ওই সড়ক গুলো এখন ১০ গ্রামের দু:খে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষ, রোগী, বৃদ্ধ ও শিক্ষার্থীরা চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন প্রতিদিন। দূর্ঘটনায় আহত নিহতের ঘটনাও ঘটছে। গ্রামীণ ওই সড়ক গুলো নির্মাণ ও সংস্কারের দাবী জানিয়ে আসছেন স্থানীয়রা। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আকুতি জানিয়েছেন মো. সুমন রেজা নামের এক ইউপি সদস্য। সরেজমিন অনুসন্ধান ও ভুক্তভোগি সূত্র জানায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শাহবাজপুর দ্বিতীয় গেইট চৌরঙ্গির মোড় থেকে হাই স্কুল ও দেওড়া হয়ে শাহজাদাপুর ইউনিয়নের মলাইশ ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার সড়ক বেহাল। ছোট বড় খানাখন্দ ও কার্পেন্টিং উঠে চলাচল অনুপযোগি হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলে খানাখন্দ গুলি পানি ভর্তি খালের রূপ ধারণ করছে। যাদবপুর থেকে ধীতপুর পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কটিও ভেঙ্গে চৌঁচির। দেওড়া হাই স্কুলের মোড় থেকে ঈদগাহ পর্যন্ত ও মলাইশ প্রিয়লাল মাস্টারের বাড়ি থেকে পল্লব সরকারের বাড়ি সংলগ্ন ব্রীজ পর্যন্ত সড়কটি ভেঙ্গে চিহ্ন বা অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার পথে। এই সড়ক গুলি দিয়ে প্রতিদিন শাহ্বাজপুর, উত্তর ধীতপুর, দক্ষিণ ধীতপুর, যাদবপুর, দেওড়া, গাজিপুর, মলাইশ, শাহ্জাদাপুর, নিয়ামতপুর ও ধাউরিয়া গ্রামের হাজার হাজার নারী পুরূষ ও শিক্ষার্থীরা যাতায়ত করছেন। সিএনজি চালিত ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশাই হচ্ছে এই সড়কের প্রধান যানবাহন। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বৃদ্ধ, বিভিন্ন ধরণের রোগী ও শিক্ষার্থীসহ সকলেই অনেক কষ্টে এই সড়কে যাতায়ত করছেন। ফলে মাঝেমধ্যে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত ও নিহতের ঘটনা ঘটছে। অনেককে বরণ করতে হচ্ছে পঙ্গুত্ব। নাভিশ্বাস উঠছে স্কুল কলেজগামী ছাত্রছাত্রীদের। নিয়ামতপুর গ্রামের ইউপি সদস্য অমরেশ, মলাইশ গ্রামের জীবন চৌধুরী, দেওড়া গ্রামের মো. আনার মিয়া বলেন, ডিসি রোডসহ অন্যান্য গ্রামীণ সড়ক গুলো নির্মাণের পর আর সংস্কারের ছুঁয়া পায়নি। ফলে সড়ক গুলো ভেঙ্গে খালে পরিণত হয়েছে। আমাদের প্রতিদিনের যাতায়তই এখন ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা খুবই দূরাবস্থার মধ্যে জীবনযাপন করছি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তড়িত হস্তক্ষেপ কামনা করছি। শাহবাজপুর গ্রামের ইউপি সদস্য মো. সুমন রেজা বলেন, মাষ্টার বাড়ি থেকে উবায়দুল্লাহ সড়ক পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়ক ১৫ বছর ধরে বেহাল। অথচ সৈয়দা হুসেনা আফজাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাঁদাপানিতে একাকার হয়েই এই সড়কে যাতায়ত করছে। এছাড়াও শাহবাজপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গুরূত্বপূর্ণ গ্রামীণ সড়ক সংস্কার, ড্রেইন, কার্লভার্টের কাজ খুবই জরূরী। গ্রামের সাধারণ মানুষ খাবার চাই না। তারা ভালো থাকতে চান। চলাফেরায় স্বস্থি চান। ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী মোছা. ঝিলিক আক্তার ও দশম শ্রেণির ছাত্রী মিম আক্তার বলেন, শুনছি সারা দেশে কাজ হচ্ছে। কিন্তু আমাদের স্কুলে যাওয়ার ছোট রাস্তার কাজটি কেন জানি হচ্ছে না। বৃষ্টি হলে পড়নের সুন্দর জামা কাপড় কাঁদাপানিতে নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও খুব কষ্টে এই সড়কে যাতায়ত করতে হয়। এ বিষয়ে জানতে সরাইল উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রীতুল ভৌমিক বলেন, আমি সদ্য দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। সড়কটি সংস্কারের কোন উদ্যোগ বা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা অফিস থেকে জেনে আপনাকে জানাতে হবে।