আজ শিক্ষা ভবন অভিমুখে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ‘ভূখা মিছিল’

তিন দফা দাবিতে রাজধানীর শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। এবার তারা নতুন কর্মসূচি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষা ভবন অভিমুখে ‘ভূখা মিছিল’। আজ রোববার (১৯ অক্টোবর) এ মিছিলে খালি থালা ও প্লেট হাতে অংশ নেবেন শিক্ষকরা।  

শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “আমরা দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তুলছি, জাতির মেরুদণ্ড শক্ত করছি। কিন্তু আজও নিজেদের জীবনে নিরাপত্তা ও স্বীকৃতির নিশ্চয়তা পাই না। বছরের পর বছর ধরে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা নানা প্রতিশ্রুতি শুনেছেন, কিন্তু বাস্তবে কোনো ফল মেলেনি।”  

অধ্যক্ষ আজিজী বলেন, “শিক্ষক হিসেবে এমন এক অবস্থায় এসে পৌঁছেছি, যেখানে খালি থালা হাতে রাস্তায় নামা ছাড়া কোনো উপায় নেই। এটি শুধু প্রতীকী প্রতিবাদ নয়, এটি আমাদের অন্তরের কান্না, বঞ্চনা ও অসম্মানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা।”  

তিনি আরও বলেন, “সরকার চাইলে আজই এ সংকটের অবসান ঘটাতে পারে। আমাদের আর অনিশ্চয়তার মধ্যে রাখবেন না। শিক্ষক সমাজ মর্যাদা চায়, করুণা নয়।”  

এর আগে গত ১২ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন শিক্ষকরা। পরদিন তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন এবং সেখান থেকেই লাগাতার কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে সারাদেশের প্রায় ৩০ হাজার স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টানা কর্মবিরতি চলছে, ফলে ক্লাস ও পরীক্ষা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।  

শিক্ষকরা তিন দফা দাবি জানিয়েছেন—মূল বেতনের ওপর ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১ হাজার ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা নিশ্চিত করা। অর্থ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি মাত্র ৫০০ টাকা বাড়িভাড়া বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন দিলে শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করেন।  

অধ্যক্ষ আজিজী বলেন, “আমরা শিক্ষক, কিন্তু ন্যায্য প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত। তাই খালি থালা হাতে রাস্তায় নামতে বাধ্য হচ্ছি। আশা করি সরকার দ্রুত আমাদের দাবি বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেবে।”