বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের টানা আন্দোলনের মধ্যে তাদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এখন থেকে এই ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ বা সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা হারে প্রদান করা হবে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) সকালে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগের উপসচিব মিতু মরিয়ম স্বাক্ষরিত চিঠিতে জানানো হয়, সরকারের বিদ্যমান বাজেট সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় নিয়ে এই ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। আদেশটি আগামী ১ নভেম্বর ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কিছু শর্ত মানতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে—এই ভাতা পরবর্তী জাতীয় বেতনস্কেল অনুসারে সমন্বয় করতে হবে, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও নীতিমালা মেনে নিয়োগের শর্তগুলো নিশ্চিত করতে হবে, এবং ভাতা প্রদানে কোনো অনিয়ম ঘটলে বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেন। এছাড়া এই বাড়িভাড়া বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কেউ বকেয়া প্রাপ্য হবেন না।
সরকারি এই সিদ্ধান্ত এসেছে এমন এক সময়ে, যখন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও উৎসব ভাতা বাড়ানোর দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আন্দোলনকারীরা মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতা, চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ নির্ধারণের দাবি জানিয়ে আসছেন।
গত ১২ অক্টোবর থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ব্যানারে শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় প্রেসক্লাব, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ ও শাহবাগ অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। আজ রোববারও (১৯ অক্টোবর) তাঁদের থালা-বাটি হাতে শিক্ষা ভবন অভিমুখে ‘ভুখা মিছিল’-এর কর্মসূচি রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার আলোচনার পর অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে বা সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব দেন। অবশেষে সরকার সেই প্রস্তাবই বাস্তবায়নের ঘোষণা দিল।
যদিও আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবি, এই সিদ্ধান্ত তাদের প্রত্যাশা পূরণ করছে না। তাঁদের বক্তব্য অনুযায়ী, “মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতা না পেলে আন্দোলন চলবে।”
দীর্ঘ আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সরকারের এ সিদ্ধান্তকে অনেকেই আংশিক অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন। তবে শিক্ষক নেতাদের মতে, তাদের যৌক্তিক দাবি পূরণ না হলে তারা অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন।