শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুনের পরও এখনও ধোঁয়া উড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর, ২০২৫, ০২:২৭ পিএম
শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুনের পরও এখনও ধোঁয়া উড়ছে

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের একদিন পরও ধোঁয়া উড়ছে। শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেল আড়াইটার দিকে লাগা এই আগুন রাতে নিয়ন্ত্রণে এলেও রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত ঘটনাস্থল থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। ফায়ার সার্ভিসের ২২টি ইউনিট এখনো পানি ছিটিয়ে আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপণের চেষ্টা করছে।

ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার লিমা খানম জানিয়েছেন, উদ্ধার ও শীতলীকরণ কাজ এখনো চলছে। আগুন যেন আবার দাউ দাউ করে না জ্বলে ওঠে, সে জন্য দুই দিক থেকে পানি ছিটানো হচ্ছে। শনিবারের এই ভয়াবহ আগুনে কোটি কোটি টাকার পণ্য পুড়ে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

কার্গো ভিলেজের যেই অংশে আগুন লেগেছিল, সেখানে মূলত আমদানিকৃত পণ্য রাখা হয়। রোববার সকাল থেকেই ধ্বংসস্তূপ দেখতে সেখানে জড়ো হন ব্যবসায়ী, রপ্তানিকারক ও উৎসুক মানুষ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তার কারণে কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। আগুনের ঘটনায় বিমানবন্দরের ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো মাঠে নেমেছে। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) তাদের সদস্য কোম্পানিগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের বিস্তারিত তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছে। বিজিএমইএ জনসংযোগ কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদ করিম জানিয়েছেন, আগামী এক-দুই দিনের মধ্যে আর্থিক ক্ষতির পূর্ণ চিত্র পাওয়া যাবে। দুপুরে বিজিএমইএ’র একটি প্রতিনিধি দল কার্গো ভিলেজ পরিদর্শন করেছে।

বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেছেন, “এই মুহূর্তে ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে নিশ্চিত নই। বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকলে রপ্তানিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, দ্রুত কার্যক্রম চালু করা গেলে ক্ষতি কিছুটা কমানো সম্ভব হবে।  

সবজি ও পচনশীল পণ্য রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিএফভিএপিইএ সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তাদের সদস্যদের কার্গোতে কত পণ্য ছিল তা যাচাই করা হচ্ছে। “আমাদের প্রতিদিনই কিছু পণ্য থাকে, বিমানের ফাঁকা স্থানের ওপর নির্ভর করে কতটা পাঠানো যাবে তা নির্ধারিত হয়,” বলেন তিনি।

শনিবার বিকেলে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিটের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বিজিবি কাজ করে। টানা সাত ঘণ্টা চেষ্টার পর রাত ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে এবং বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠানামা স্বাভাবিক হয়। আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিস, সিভিল অ্যাভিয়েশন ও আনসারের অন্তত ৩৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৫ জন আনসার সদস্যকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কার্গো ভিলেজটি বিমানবন্দরের আট নম্বর গেটের পাশে পোস্ট অফিস ও হ্যাঙ্গারের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত। আগুনে আমদানির কার্গো কমপ্লেক্স ভবনের বেশিরভাগ মালামাল পুড়ে গেছে বলে জানা গেছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিমানবন্দরের কার্যক্রম কিছু সময়ের জন্য স্থগিত থাকলেও এখন ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে