এআই অপপ্রচার ও ড্রোন ব্যবহারে কড়া নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ২০ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:৫৫ পিএম
এআই অপপ্রচার ও ড্রোন ব্যবহারে কড়া নিষেধাজ্ঞা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম সুসংহত করতে বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তিনটি ধাপে—তফসিল ঘোষণার আগে, নির্বাচনকালীন ও নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে—নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।  

সোমবার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। সেখানে অন্য চার কমিশনার, ইসির সিনিয়র সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।  

ইসি সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনের আগে, চলাকালীন ও পরবর্তী সময়ে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় গঠন করা হবে। প্রথম ধাপে তফসিল ঘোষণার আগে চিহ্নিত অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় উদ্যোগ নেওয়া হবে।  

দ্বিতীয় ধাপে, অর্থাৎ তফসিল ঘোষণা থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত সময়টিকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই সময় সকল প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণা নির্বিঘ্ন রাখতে এবং ভোটারদের নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে বিশেষ জোর দেওয়া হবে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশ ছাড়াও র‌্যাব, বিজিবি, আমর্ড পুলিশ, কোস্টগার্ড ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন থাকবে। প্রয়োজন অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সশস্ত্র বাহিনীও দায়িত্ব পালন করবে।  

নির্বাচনের পরবর্তী ধাপে সহিংসতা প্রতিরোধে ভোটের পর অন্তত ৪৮ ঘণ্টা মোবাইল টিম ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে থাকবে। এ সময় এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এবং জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সংক্ষিপ্ত বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।  

ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রাজনৈতিক দল নিবন্ধন, ভোটার তালিকার সিডি প্রস্তুত ও ভোটকেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের কাজ চলছে।  

সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ বজায় রাখতে নির্বাচন কমিশন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। বিশেষ করে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট শনাক্ত ও দমন করার জন্য আলাদা পর্যবেক্ষণ টিম গঠন করা হবে।  

একই সঙ্গে নির্বাচনি এলাকায় ড্রোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করার প্রস্তুতিও নিচ্ছে ইসি। কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপত্তা ঝুঁকি, গোপনীয়তা লঙ্ঘন ও অননুমোদিত নজরদারির সম্ভাবনা থাকায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।  

এছাড়া সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ নজরদারি থাকবে। বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের নিরাপদে দায়িত্ব পালনের জন্যও প্রয়োজনীয় আইনানুগ সহযোগিতা নিশ্চিত করবে সরকার ও ইসি।  

ইসি সূত্র জানায়, “শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য মাঠে থাকা প্রতিটি বাহিনীকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। সব সংস্থার মধ্যে যোগাযোগ ও তথ্য আদানপ্রদানে যেন কোনো ঘাটতি না থাকে, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”  

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে