দেশের রাজনীতি ও নির্বাচনী মাঠে সিলেটের মর্যাদাপূর্ণ আসন সিলেট সিটি কর্পোরেশন ও সদর উপজেলা মিলিয়ে (সিলেট-১)। জামায়াতের প্রার্থী যেখানে দীর্ঘদিন যাবৎ নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে, সেখানে প্রার্থী নির্বাচনে বিলম্বে চেয়ারপারসনের দুই উপদেষ্টার মনোনয়ন লড়াইয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে বিভক্তি তৈরি হচ্ছে। রাষ্ট্রক্ষমতার ধারাবাহিক পরিবর্তনের একটি যোগসূত্র এই আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের দুই উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর মনোনয়ন লড়াই তুমুল আকার ধারণ করেছে।
তবে, একক প্রার্থী ঘোষণার পর জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও সিলেট জেলা আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান নিরবিচ্ছিন্নভাবে মাঠে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিএনপির একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকায় গত ১৯ অক্টোবর বৃহত্তর সিলেটের ১৯টি আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নিয়ে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৈঠক করেছেন। বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে সবাইকে দলের জন্য কাজ করার কথা বলেন তিনি।
এদিকে আজ (২২ অক্টোবর), বুধবার দুপুরে হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে সিলেট-১ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী, সিলেটের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছেন।
যেখানে গত ৮ অক্টোবর বিকেলে হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার মসজিদে দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে সিলেট-১ আসনে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির।
অন্যদিকে গত ২০ মে সিলেট জেলা ও মহানগর জামায়াতের যৌথসভায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও সিলেট জেলা আমির মাওলানা হাবিবুর রহমানকে সিলেট-১ আসনে জামায়াতের সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এবং তিনি মাঠে কাজ শুরু করছেন। বিগত ইতিহাসের ধারাবাহিকতায়, আধ্যাত্মিক নগরী সিলেটের মর্যাদাপূর্ণ এই আসন থেকে যে প্রার্থী বিজয়ী হন, সেই দলেরই পরে সরকার গঠিত হয়েছে।
২০২৪-এর জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতন ও ফ্যাসিস্ট হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে নিবন্ধিত সবগুলো দলই মাঠে রয়েছে।
আওয়ামী লীগ পতনের পর দেশে অনেকগুলো দলের মাঝে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। যদিও ছোট ছোট দলগুলোকে নির্বাচনী জোটে টানতে উভয় দলেরই জোরালো তৎপরতা রয়েছে।
তবে ইতোমধ্যেই জামায়াতে ইসলামী তাদের নির্বাচনী আসনগুলোতে প্রার্থী ঘোষণা করেছে এবং তারা মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেছে। এদিকে, সারা দেশের নির্বাচনী আসনগুলোতে বিএনপির একাধিক নেতা মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে মাঠে কাজ করছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ ঘোষণার পর থেকেই সিলেটসহ সারাদেশে শুরু হয়েছে মাঠ পর্যায়ের নির্বাচনী তৎপরতা।