পাবনার চাটমোহর পৌর সদরে অবস্থিত সামাদ সওদা মহিলা দাখিল মাদ্রাসার বরখাস্তকৃত সুপার মোঃ আঃ ওয়াহহাবকে স্বপদে (সুপারিনটেনডেন্ট) দায়িত্ব পালন করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড। একইসাথে সুপার মোঃ আব্দুল ওয়াহহাব কর্তৃক মাদ্রাসার পাসওয়ার্ড পরিবর্তনসহ পরিচালনা কমিটি গঠণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২২ অক্টোবর) বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের বামাশিবো/প্রশা/পাবনা-১২৬/১৫৩ নং স্মারকপত্রে মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের নির্দেশক্রমে রেজিস্ট্রার প্রফেসর ছালেহ আহমেদ স্বাক্ষরিত পত্রে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। এই পত্র জারির পর থেকেই মোঃ আঃ ওয়াহহাব সামাদ সওদা মহিলা মাদ্রাসার সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এই পত্রের অনুলিপি পাবনা জেলা প্রশাসক,পাবনা জেলা শিক্ষা অফিসার,চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার,সুপার আব্দুল ওয়াহহাব,ম্যানেজার সোনালী ব্যাংক,রুপালী ব্যাংক,জনতা ব্যাংক লিঃ,পিও টু চেয়ারম্যান/পিও টু রেজিস্ট্রার মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড,ঢাকা,আইন সেল,মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড,ঢাকাকে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরেজমিন তদন্তপূর্বক মতামতসহ প্রতিবেদন মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডে প্রেরণ করেছেন। প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেছেন,“মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের রায়,মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা এবং মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের আদেশের প্রতি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অসম্মান করা হয়েছে”।
চাটমোহর পৌর সদরের সামাদ সওদা মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় নানা অনিয়ম আর দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ভারপ্রাপ্ত সুপার মোঃ মোসলেম উদ্দিনের বিরুদ্ধে। সর্বশেষ ওই মাদ্রাসার এবতেদায়ী শাখার একজন শিক্ষক মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের জন্য তৈরিকৃত ভোটার তালিকায় দাতা সদস্য হিসেবে একবার ভোটার হয়েছেন। আবার শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবেও ভোটার হয়েছেন। শুধু তাই নয় এবতেদায়ী শাখায় করা হয়েছে ভুয়া ভোটার। মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার তার অনিয়ম জায়েজ করার জন্যই এ ধরণের অনিয়ম করেছেন। শুধু তাই নয়,মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মোসলেম উদ্দিন সুপার পদে বহাল থাকার জন্য মাদ্রাসার ছাত্রীদের দিয়ে ওই মাদ্রাসার সুপার আব্দুল ওয়াহহাবের বিরুদ্ধে মানববন্ধনও করিয়েছেন। মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড আর আদালতের নিদের্শনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তিনি এ ধরণের কর্মকান্ড চালিয়েছেন বলে অভিযোগ।
মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার আদালতের নির্দেশ ও মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশ অমান্য করে মাদ্রাসার সুপার মওলানা আঃ ওয়াহহাবকে স্বপদে বহাল না করে তার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতেই এই কার্যক্রম চালাচ্ছেন। যদিও তার বেতন-ভাতা এখন বন্ধ রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত সুপার ভুয়া ভোটার করার পর মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন গোপনে করে কমিটি গঠণ করে তা অনুমোদনের জন্য মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডে পাঠান।
মাদ্রাসার সুপার আঃ ওয়াহহাবেেক স্বপদে বহাল করার জন্য আদালত ও মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড নির্দেশ দিয়েছেন। গত ১৯ আগস্ট’২৫ ইং তারিখে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ছালেহ আহমাদ তাঁর দপ্তরের বামাশিবো/প্রশা/পাবনা-১২৬/৮৮ নং স্মারকপত্রে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপারকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক এই পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু তাকে বহাল করা হয়নি। মানা হয়নি আদালত ও মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশনা। উপরন্তু মাদ্রাসার সুপার যাতে স্বপদে ফিরতে না পারেন,এজন্য মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতি ইমরান হোসেন তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করেছেন। বিগত ৯ বছর যাবত ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসেবে দায়িত্বে থাকা সহকারি সুপার মোঃ মোসলেম উদ্দিন নানাবিধ সুবিধা ভোগ করার কারণে মাদ্রাসার সুপারকে স্বপদে বহাল করতে গড়িমসি করছেন বলে অভিযোগ। ভারপ্রাপ্ত সুপার এখনো নানা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অবশেষে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড আব্দুল ওয়াহহাবকে সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন এবং পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করাসহ পরিচালনা কমিটি গঠণের নির্দেশনা দিলো।