উন্নত জাতের ধান উৎপাদনের জন্য নওগাঁর সুখ্যাতি আছে দেশজুড়ে। জেলার অধিকাংশ কৃষকই ধান উৎপাদনের সাথে সম্পৃক্ত। তাই ধান উৎপাদনের সাথেই জড়িয়ে থাকে এলাকার কৃষকের স্বপ্ন। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে আমন ধান রোপনের পর থেকেই সুষ্ঠভাবে ঘরে ধান তোলার স্বপ্নে বিভোর থাকে কৃষক-মজুররা। এ সময় ফসলের মাঠে সর্বস্ব বিনিয়োগ করে ধান ঘরে তোলার প্রহর গুনতে থাকে তারা। পরিবারের ছোট-খাট সমস্যাগুলি শিকোয় তুলে রেখে অপেক্ষার প্রহর গোনে নতুন ধান ঘরে তোলার। আমনের ফসলের মাঠে যেন দোল খায় কৃষকের স্বপ্ন।
সরেজমিনে নওগাঁ জেলার পত্নীতলা, মহাদেবপুর, সাপাহার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে গেছে, মাঠে মাঠে শোভা পা্েছ কোথাও সদ্য প্রস্ফুটিত হওয়া সবুজ ধানের শীষ আবার কোথাও আধা-পাকা ধান। হালকা বাতাসে যেন দোল খাচ্ছে মাঠের ধানের শীষগুলো। মাঠে মাঠে কৃষকরা কারেন্ট পোকা দমনের জন্য স্প্রে করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শুক্রবার সকাল ৯টায় ধানের ক্ষেতে কীটনাশক স্প্রে করার সময় কথা হয় পদ্মপুকুর গ্রামের কৃষক মো. জাহাঙ্গীর আলমের সাথে। তিনি জানান, চলতি আমন মৌসুমে তিনি ৪বিঘা জমিতে ৫জাতের ধান ও ১বিঘা জমিতে আতব ধান লাগিয়েছেন। বর্তমানে ধানের ক্ষেতে কারেন্ট পোকার আক্রমণ খুবই বেশী। এই পোকার আক্রমণ থেকে ধান রক্ষার জন্য অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। জমিতে ধান রোপণের পর থেকে এ পর্যন্ত তিনি ৮বার কীটনাশক প্রয়োগ করেছেন। ধান ঘরে তোলার আগে আরো ২বার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ১ বিঘা জমিতে ১বার কীটনাশক প্রয়োগ করলে ১হাজার টাকা খরচ হয়। সে হিসাবে ১ বিঘা জমিতে ধান আবাদের জন্য শুধু কীটনাশক খরচই ১০হাজার টাকা। অন্যদিকে ১বিঘা জমিতে সব্বোর্চ ২২-২৫মণ ধান পাওয়া যাবে বলেও তিনি জানান। বাজারে ধানের দাম নূন্যতম মণপ্রতি ১হাজার ৫শত টাকা না হলে কৃষকের লোকসান হবে বলে জানান এই কৃষক। তিনি আরো বলেন, আমরা যারা কৃষক আছি তাদের সমস্ত বিনিয়োগ এই ধানের মাঠে। আর এই ধান ঘরে তোলার মধ্যেই নিহিত থাকে আমাদের পরিবারের স্বপ্ন ও আশা।
চলতি মৌসুমে পত্নীতলা উপজেলায় ২৩ হাজার ৪শত ২৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।