রাজশাহীর পুঠিয়ায় ইউএনও নিজের স্বার্থে একটি আশ্রয়ণে ৬৭ লাখ টাকা ব্যয় করে একটি ব্রিজ নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে। তিন বছরের ভিতরে ব্রিজটি যাতায়তের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। অবশ্য বর্তমাণে ব্রিজটি মাদককারবারিদের যাতায়তের সেতুবন্ধন হিসাবে গড়ে উঠেছে।
জানা গেছে, পুঠিয়া সদর ইউনিয়নের পীরগাছা তালুকদার আশ্রয়ণে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের,দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ২০২১-২২ অর্ধ বছরের অর্থায়নে ৬৭ লাখ ৫০ হাজার ৪৭৪ টাকা ব্যয়ে ৫০ ফিট একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছের এলাকার বংশের নাম তালুকদার হওয়ায় ব্রিজটি এলাকায় প্রয়োজন ছিল না। কিন্ত ্ইউএনও বংশের তালুকদার হওয়ার কারণে তালুকদার আশ্রয়ণে এত টাকা ব্যয় করে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলায় এমন অনেক স্থান রয়েছে,যেখানে হাজারো প্রয়োজনে,শত চেষ্টা করার পরও এলাকাবাসীরা একটি ব্রিজ নির্মাণ করার সুযোগ পাচ্ছেন না। কিন্তু তালুকদার আশ্রয়ণে মাত্র ১০৯টি ঘর রয়েছে। সিদ্দিকুর রহমান নামের পীরগাছা এলাকার ব্যক্তি বলেন,এখানে শুধু রাষ্ট্রের টাকা অপচয় করা হয়েছে। ব্রিজটি এলাকার সিংহভাগ মানুষের উপকারে আসছে না। উপজেলার যেসব স্থানগুলি দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ যাতায়ত করে সেসব স্থানে বেশি টাকার ব্রিজ নির্মাণ করা উচিত ছিল। এখানে পায়ে হাটার মতো একটি পাড়াপাড়ের কালভাট নির্মাণ করলেই মানুষ যাতায়াত করতে পাড়তেন। ছইমুদ্দিন আলি বলেন, এখানে ইউএনওর ব্যক্তি স্বার্থের জন্য ব্রিজটি তৈরি করা হয়েছে। গত তিন বছরের ভিতরে ব্রিজটি দুই পাশে ভাঙ্গাচুড়া দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ব্রিজের ওপর দিয়ে কোনো যানবাহন যাতায়াত করতে পারে না। এলাকার মানুষদের পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে হচ্ছে। তারপর, যে কোনো সময়ে ব্রিজের প্রটেকশন ওয়াল ভেঙ্গে পড়তে পড়ার ঝুকি রয়েছে। অবশ্য মাদক পাচারকারিদের উপকার হয়েছে। এখানে সন্ধ্যা হলেই মাদককারবারিদের আনাগুনা বৃদ্ধি পায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রতিনিধি বলেন, ভারত সীমান্তবর্তী বাঘা, চারঘাট দুই উপজেলা মাদককারবারিরা বর্তমানে তালুকদার গ্রামের ব্রিজটি ব্যবহার করছে। নাটোর জেলা সদরের ওপর দিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মাদক চলে যাওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এই স্থানটি তাদের নিকট নিরাপদ হওয়ার কারণ, ব্রিজটি পাড় হলেই নাটোর জেলার সীমানা এসে পড়ে। কোনো সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা মাদককারবারিদের ধাওয়া করলেই, ব্রিজের অপপ্রান্তে তাদের লোকজন বিভিন্ন রকম যানবাহন নিয়ে প্রস্তত হয়ে থাকছে। আগে মুসা খাঁ নদীর কারণে মাল নিয়ে পাড়াপাড়ের অসুবিধা হতো। ব্রিজটি নির্মাণ হওয়ার পর তালুকদার আশ্রয়ণসহ আশপাশে এলাকায় মাদককারবারিদের তৎপরতা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাহাবুবা আক্তার বলেন, আমি এই ব্রিজটি সম্পর্কে কিছুই বলতে পারব না। তারপর আমি রোববার গিয়ে ব্রিজটি দেখব। এরপর ব্রিজটি আমার সময়ে নির্মাণ করা না।