গণভোট ও পিআর নিয়ে একটি দলের নেতারা মস্করা করছেন: ফখরুল ইসলাম

জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগর আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেছেন, হাজারো ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে ফ্যাসিবাদের পতন ও গণঅভ্যুত্থানের পরও গণদাবি আদায়ের জন্য আমাদেরকে রাজপথে আন্দোলন করতে হচ্ছে। যা জাতির জন্য দুঃখজনক। যেনতেনভাবে জুলাই সনদে স্বাক্ষরের পর এর আইনি ভিত্তি নিয়ে কালক্ষেপণ চলছে। এ বিষয়ে কূটকৌশল গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিয়ে কোনো টালবাহানা ছাত্র-জনতা মেনে নেবে না। নভেম্বরে গণভোট আয়োজনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে; অন্যথায় আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, গণভোট ও পিআর পদ্ধতি নিয়ে একটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা মস্করা ও আপত্তিকর মন্তব্য করছেন, যা গণদাবির সঙ্গে তামাশার শামিল। সরকারের কিছু উপদেষ্টা ও কর্মকর্তা একটি দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছেন, ফলে দেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে। জামায়াতসহ দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, গণভোট এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে যুগপৎ কর্মসূচি পালন করছে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের দাবি পূরণে কালক্ষেপণ করে একটি দলের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছে। জনগণ এসব ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই মেনে নেবে না। জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে- এর আগে নভেম্বরে গণভোট আয়োজন করতে হবে।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে সিলেট নগরীর সিটি পয়েন্টে ‘জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও উক্ত আদেশের ওপর আগামী নভেম্বরের মধ্যে গণভোট আয়োজনসহ পাঁচ দফা দাবিতে’ সিলেট মহানগর জামায়াত আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ব সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল সিটি পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে আম্বরখানা পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল-সমাবেশে সিলেট মহানগর জামায়াতের বিভিন্ন স্তরের হাজারো নেতা-কর্মী অংশ নেন।

মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জাহেদুর রহমান চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মিছিল-পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য, সিলেট জেলা আমীর ও সিলেট-১ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা হাবিবুর রহমান।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- সিলেট জেলা নায়েবে আমীর ও সিলেট-৫ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী হাফিজ আনোয়ার হোসাইন খান, জেলা নায়েবে আমীর ও সিলেট-২ আসনে প্রার্থী অধ্যাপক আব্দুল হান্নান, সিলেট মহানগর নায়েবে আমীর ড. নূরুল ইসলাম বাবুল, জেলা সেক্রেটারি ও সিলেট-৪ আসনে প্রার্থী জয়নাল আবেদীন, মহানগর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি এডভোকেট জামিল আহমদ রাজু এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সিলেট মহানগর সভাপতি শাহীন আহমেদ।

সিলেট জেলা আমীর ও সিলেট-১ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী মাওলানা হাবিবুর রহমান বলেন, দেশে জামায়াতের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। একটি দল এই গণজোয়ার দেখে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণে জামায়াত অঙ্গীকারবদ্ধ। তাই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, নভেম্বরে গণভোট এবং জামায়াত ঘোষিত পাঁচ দফা দাবিতে রাজপথে কর্মসূচি পালন করছে। গণদাবি পূরণের আন্দোলনের ফসল অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এখন টালবাহানার পর্যায়ে চলে গেছে- যা জনগণকে উদ্বিগ্ন করছে। গণদাবির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মহানগর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা ইসলাম উদ্দিন, জেলা সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা মাশুক আহমদ এবং ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ আল হোসাইন প্রমুখ।