মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের নতুনচর গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার গত দেড় মাস ধরে পানিবন্দী হয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে যাওয়ায় এমন দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তাঘাট, বাড়ির উঠান পানিতে ডুবে গেছে। যেখানে পা ফেলছেন সেখানেই পানি। এতে করে চরম দুর্ভোগে দিন পার করছেন ওই এলাকার লোকজন এবং দুর্ভোগে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, কয়েক বছর আগে নতুনচর গ্রামের কাঁচা রাস্তাটি পাকা করার সময় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে গ্রামের প্রায় সব পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তার মধ্যে কমপক্ষে শতাধিক বাড়ির ঘরে বা উঠানে পানি। নোংরা পানিতে চলাচল করায় অনেকেই নানা চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বাড়িঘরে বসবাসের পরিবেশ না থাকায় শতাধিক শিক্ষার্থীর স্কুল-মাদ্রাসায় যাওয়াসহ পড়াশোনা বন্ধ। প্রায় দেড় মাস ধরে এ অবস্থা চলতে থাকায় অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
এ সময় ওই গ্রামের গৃহিণী শাহনাজ আক্তার বলেন, বাড়ির চতুর্দিকে পানি। আমরা মহিলারা কী যে বিপদে আছি বোঝাতে পারব না। এ ছাড়া নোংরা পানিতে হাঁটাচলা করায় ছেলেমেয়েসহ আমরা চুলকানিসহ নানা চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছি।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা এর আগে কখনো এখানে এমন জলাবদ্ধতা দেখি নাই। যতক্ষণ বৃষ্টি ততক্ষণ পানি থাকতো। বৃষ্টি শেষ হওয়ার সাথে সাথে পানি চলে যেতো। নতুনচর গ্রামের কাঁচা রাস্তাটি পাকা করার সময় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়া বৃষ্টি হলেই পানিতে ডুবে যায় পুরো গ্রাম।
ভুক্তভোগী শাহিদা আক্তার নামে এক নারী বলেন, দেড় মাস আগে টানা বৃষ্টিতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছি। বাড়ির মধ্যে পানি টলমল করছে। ঘরের মেঝেতেও পানি। কোথায় থাকবো, কোথায় খাবার রান্না করবো। কোন উপায় নেই। বাধ্য হয়ে মেয়ের জামাইর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়ে আছি। আমাদের গ্রামের মধ্যে থেকে পানি বের হওয়া কোন পথ নেই। পানিবন্দি হয়ে আমরা মানবেতর জীবন যাপন করছি।
স্থানীয়দের অভিযোগ গ্রামের মধ্যে ড্রেন অভাবে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ওই গ্রামের মানুষকে। তবুও কোন নজর নেই কারো। দ্রুত এই জনদুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতে পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন নির্মাণের দাবি জানিয়েছে তারা।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুল আলম বলেন, নতুন চর গ্রামের বাসিন্দারা পানিতে বন্ধি হয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এমন খবর শুনে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শ করেছি। ওই এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য কয়েক ধাপে ড্রেনেজ সিস্টেম করা হবে। ইতোমধ্যে প্রাক্কলন তৈরী করা হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।