সুন্দরগঞ্জে কাঠের ব্রীজ ভেঁঙ্গে পড়ায় ২০ গ্রামের মানুষের দূর্ভোগ

এফএনএস (মোঃ ইমদাদুল হক; সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা) : | প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর, ২০২৫, ০৫:৫৪ পিএম
সুন্দরগঞ্জে কাঠের ব্রীজ ভেঁঙ্গে পড়ায় ২০ গ্রামের মানুষের দূর্ভোগ

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকায় তিস্তার শাখা নদীর উপর ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত কাঠের ব্রীজটি চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার পর বছর পেরোতে না পেরোতেই ভেঁঙ্গে পড়েছে। আর এর ভেঁঙ্গে যাওয়া বিশাল অংশে বাঁশের সাঁকো দেয়া হলেও তা নড়বড়ে হয়ে পড়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই প্রতিনিয়তঃ ২০ গ্রামের হাজারও মানুষ চলাচল করলেও স্থায়ী ব্রীজ নির্মাণের কোন  উদ্যোগ নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ 

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বেলকা খেয়া ঘাটে তিস্তা শাখা নদীর উপর স্থায়ী ব্রীজ নির্মাণের দাবী জানিয়ে আসছিলেন এপাড়-ওপাড়ের হাজারও মানুষ । তাদের দাবীর মূখে উপজেলা প্রশাসন ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ১০৫ মিটার দীর্ঘ ১.৩ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট একটি কাঠের ব্রীজ নির্মাণের জন্য প্রকল্প হাতে নেয়। এডিপি ও রাজস্ব খাত থেকে বরাদ্দ দেয়া হয় ২৭ লাখ ৫০ হাজার ২৫০ টাকা। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মেসার্স শাহানুর ইসলাম (ছানা) নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ব্রীজটি নির্মাণের জন্য কার্যাদেশ দেয়া হয়। ব্রীজ নির্মাণের কথা শুনে ওই খেয়া ঘাট ব্যবহার করে প্রতিনিয়তঃ ২০ গ্রামের শিক্ষার্থীসহ এলাকার হাজারও মানুষ যারা কিনা ঐতিহ্যবাহী বেলকা বাজার, বেলকা উচ্চ বিদ্যালয়, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ডিগ্রি কলেজ, কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কেজি স্কুল, গাইবান্ধা শহর, উপজেলা সদর ও আরো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যাতাযাত করতেন তাদের মাঝে আনন্দের ছোয়া লাগে। কিন্তু ঠিকাদার ব্রীজটি নির্মাণ না করেই ২০২৩ সালে ১৮ জুন চুড়ান্ত বিল গ্রহণ করলেও গড়িমসি করতে থাকে। এলাকাবাসী ঠিকাদারের এমন কর্মকান্ড দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাদের তোপের মূখে পড়ে ঠিকাদার ২০২৪ সালের ১৫ মে ২০টি আরসিসি পিলারের উপর দায়সারা ভাবে কাঠের ব্রীজের নির্মাণ কাজ শেষ করে যাতাযাতের জন্য খুলে দেয়া হলেও ওই বছরের ২০ জুন রাতে ব্রীজটির ০৬ টি আরসিসি গার্ডার পিলার দেবে যায় এবং পরবর্তিতে অর্ধেক অংশ ভেঁঙ্গে পড়ে। বেড়ে যায় চলাচল রতদের সীমাহীন দূর্ভোগ। হাজারও মানুষের যাতাযাতের সীমাহীন দূর্ভোগ লাঘবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ ভেঁঙ্গে পড়া অংশে বাঁশের খুটির উপর র্সাঁকো নির্মাণ করে দেয়। কিন্তু সাকোঁটি কয়েক মাসের মধ্যে ভেঁঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়। বর্তমানে এপাড়-ওপাড়ের হাজারও মানুষ নড়বড়ে ভাঁঙ্গা সাকোঁটি দিয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন। আগামী বর্ষা মৌসুম আসলেই সাকোঁটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়বে বলে ভুক্তভোগী ২০ গ্রামের হাজারও মানুষের অভিমত। তারা বলছেন- ২৮ লাখ টাকা জলে ভেঁসে দিয়ে আমাদের দূর্ভোগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। আগে নৌকায় ছিল আমাদের যাতাযাতের একমাত্র অবলম্বন এখন সে নৌকাও আর ভাগ্যে জুটবে না। তিস্তা শাখা নদীর বন্দীশালায় আমাদের জীবন কাটাতে হবে । তাদের দাবী ওই স্থানে জরুরি ভিত্তিতে একটি স্থায়ী ব্রীজ নির্মাণের। এ-নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ বলেন- বর্ষা আসার আগে স্থায়ী ব্রীজ নির্মাণ করা না হলে ২০ গ্রামের হাজারও মানুষের দূর্ভোগ দেখার মত কেউ থাকবে না । উপজেলা প্রকৌশলী তপন কুমার চক্রবর্তি  বলেন- নতুন প্রকল্পের ডিপিপি প্রণয়ন করা হচ্ছে। উক্ত প্রকল্পের মধ্যে ব্রীজটি নির্মাণের প্রস্তাবনা রয়েছে । ডিপিপি অনুমোদন হলেই স্থায়ীভাবে ব্রীজটির নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হবে।  

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে