মিরপুরের শিয়ালবাড়ী আলম ট্রেডিং কেমিক্যাল গোডাউনের বিস্ফোরণে পাশ্বর্বর্তী আরএন ফ্যাশন গার্মেন্টসের বিল্ডিংয়ে অগ্নিকাণ্ড ঘটে ১৪ অক্টোবর। সেই সময় সংবাদ মাধ্যমে ১৬ জন গার্মেন্টস শ্রমিকের নিহতের সংবাদ প্রচারিত হয়। কিন্তু ঢাকা মেডিকেলে ডিএনএ টেস্ট এর পরও মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের সময় মারজিয়া সুলতানা নামের একজন গার্মেন্টস শ্রমিকের কোন সন্ধান পায়নি পরিবার। অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই নিখোঁজ সন্তানের খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করেও কোন হদিস দিতে পারেনি দায়িত্বরত ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ কতৃর্পক্ষ। অবশেষে রোববার ২৬ অক্টোবর আবারও সেই কারখানার বিল্ডিংয়ে তল্লাশি চালিয়ে একজন নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনাকে শ্রমিকদের প্রতি রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে চরম অবহেলা উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছেন গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের সভাপতি শবনম হাফিজ। বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমাদের সংগঠনের পক্ষে থেকে অগ্নিকাণ্ডে নিহত শ্রমিক পরিবার এবং আহতদের খোঁজ খবর নেয়ার জন্য ঐ এলাকায় কয়েক দিন ধরেই যোগাযোগ করি। গত ২২ অক্টোবর নিখোঁজ মারজিয়া সুলতানার পরিবারের সাথে আমাদের সাক্ষাত হয়। নিখোঁজ সন্তানের সন্ধান পেতে বিভিন্ন জায়গায় ছোটাছুটি করেও কোন সন্ধান পায়নি। তৎক্ষণাৎ নিখোঁজ মারজিয়ার বাবা—মাকে সাথে নিয়ে আমরা রূপনগর থানায় যোগাযোগ করি। অভিযোগের ভিত্তিতে থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা পরিবার, স্থানীয় সেচ্ছাসেবক ও আমাদের নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে রোববার বিকেলে পুনরায় সেই কারখানায় তল্লাশি চালায়। ঐ বিল্ডিংয়ের ৩য় তলা থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শবনম হাফিজ দায়িত্বরত ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ এবং কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের প্রতি অভিযোগ করে বলেন, ১৪ তারিখ অগ্নিকাণ্ড ঘটলো, একজন শ্রমিক নিখোঁজ এই তথ্য জানার পরও কেন শ্রমিক পরিবারের প্রতি এই অবহেলা করা হলো? কারখানায় কাজের সময় নিরাপত্তা নাই আবার অগ্নিকাণ্ডে নিহত হলেও নিহতদের সন্ধানটুকুও ঠিক মতো দেয়া হয় না। হয়তো আবার থানায় না গেলে একজন শ্রমিকের মরদেহ ধ্বংস্তুপেই মিশে যেতো! অবশ্য, আমরা এখনো জানি না উদ্ধারকৃত মরদেহটি মারজিয়া সুলতানা কিনা? যে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে দ্রুততার ভিত্তিতে ডিএনএ টেস্ট করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তরের দাবি জানাই। শ্রমিক নেতা শবনম হাফিজ, নিহত শ্রমিক পরিবারকে একজীবন আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ প্রদান, আহতদের যথাযথ চিকিৎসা ও পুনর্বাসনসহ ক্ষতিপূরণের দাবি করেন। একই সাথে তিনি, গোডাউন ও কারখানাগুলোর মালিক, অগ্নিকাণ্ডের সাথে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসা এবং ঐ কারখানাগুলোর শ্রমিকদের সংখ্যা ও নিহত, আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের দাবি জানান।