সিলেটে ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলনে

সিলেট মহানগরীতে ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও বিচ্ছিন্ন চার্জিং পয়েন্টে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপনের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন, সিলেট জেলা।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন সংগঠনের নেতারা।

এর আগে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আম্বরখানা থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে পৌঁছান শ্রমিকরা। পথে তারা শ্লোগান দেন, “রিকশা ফিরিয়ে দাও”, “লাইসেন্স দাও”, “কর্মসংস্থান সৃষ্টি করো”।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ব্যাটারি চালিত রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত অন্যায় ও অমানবিক। এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা হলে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। তাদের দাবি, এই বাহন পরিবেশবান্ধব এবং নিম্নআয়ের হাজারো পরিবারের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন। প্রশাসনের পদক্ষেপে প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক পরিবার এখন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।

এর আগে সোমবার (২৭ অক্টোবর) সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের আহ্বায়ক মাসরুখ জলিল একই দাবি জানিয়ে বলেন, “ব্যাটারি চালিত রিকশা শুধু পরিবেশবান্ধবই নয়, আন্দোলনের সময় সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছে। এমনকি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ২৪ জন রিকশাচালক জীবন দিয়েছেন।”

তিনি অভিযোগ করেন, প্রশাসন এই বাহনকে অবৈধ বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। অথচ সরকারের উচিত ছিল বিআরটিএর মাধ্যমে নীতিমালা প্রণয়ন করে রিকশাগুলোর লাইসেন্স ও রেজিস্ট্রেশন প্রদান করা।

শ্রমিক ইউনিয়নের ১১ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, আটক যানবাহন ফেরত দেওয়া, চার্জিং গ্যারেজে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপন, লাইসেন্স ও রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থা চালু, শ্রমিকদের হয়রানি বন্ধ এবং বিকল্প কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা প্রদান।

গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরীর নির্দেশে নগরে ব্যাটারি চালিত রিকশা বন্ধে অভিযান শুরু হয়। এতে বহু রিকশা জব্দ করা হয় এবং বেশ কয়েকটি চার্জিং পয়েন্টের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।