দোকানে চা খাওয়াকে কেন্দ্র করে পাঁচ শতাধিক মানুষের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন শাহজাহান নামের এক চা দোকানদার।এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থী, গ্রামবাসীরা। তিন দিন পেরিয়ে গেলেও রাস্তাটি এখনো খুলে দেওয়া হয়নি। গ্রামবাসীর দাবি, দ্রুত রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করা হোক।
সোমবার সকালে গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য কুমেতপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। জোরপূর্বক রাস্তাটিতে গর্ত ও বাঁশের লাঠি পুঁতে পথ বন্ধ করে দেন স্থানীয় জমির মালিক ও চা ব্যবসায়ী শাহজাহান মিয়া। শুধু নিজের জমিতেই নয়, পাশের আরেক জায়গাতেও গর্ত করে চলাচল বন্ধ করেন তিনি। এতে ওই গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ চলাচলে চরম র্ভোগান্তিতে পড়েন।
চলাচলের রাস্তা বন্ধ থাকায় কেউ ভ্যান ও মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তার সামনে আটকে থাকছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা, কেউবা যানবাহন বাড়িতে রেখে হেঁটে যাচ্ছেন। কেউ কেউ বাইসাইকেল হাতে তুলে গর্ত পার হচ্ছেন। এ ছাড়া ছোট শিক্ষার্থীরাও ভয় ও কষ্ট নিয়ে গর্ত পার হয়ে বিদ্যালয়ে যাচ্ছেন।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, চায়ের দোকানদার শাহজাহান মিয়ার দোকানে কয়েকজন গ্রামবাসী চা না খেয়ে অন্য দোকানে চা খাওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে এমন অমানবিক কাজ করেছেন। তারা দ্রুত রাস্তা খুলে দেওয়ার ও শাহজাহান মিয়াকে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি করেছেন।
ভুক্তভোগী গ্রামবাসী জহুরুল বলেন, “সামান্য চা খাওয়াকে কেন্দ্র করে এরকম একটি ঘটনা ঘটিয়েছে সে। তার দোকান থেকে কিছু গ্রামবাসী চা না খাওয়ায় রাস্তায় গর্ত করে বাঁশের ঝোঁপঝাড় ও কাঁটা বিছিয়ে দিয়েছে। আমরা ৫০ বছর ধরে এই রাস্তা ব্যবহার করছি, এখন তিন দিন ধরে চলাচল করতে পারছি না। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।”
অটোরিকশাচালক হামিদ বলেন, “অটো, ভ্যান, মোটরসাইকেল নিয়ে চলাচল করা যাচ্ছে না। দ্রুত রাস্তাটি খুলে দেওয়ার এবং চা দোকানদার শাহজাহানের শাস্তি দাবি করছি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানিয়েও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
শিক্ষার্থী রাসেল বলেন, “এই রাস্তা দিয়ে স্কুলে যেতে অনেক সমস্যা হচ্ছে, খুব কষ্ট করে যেতে হচ্ছে। দ্রুত রাস্তাটি ঠিক করার দাবি জানাই।”
অভিযুক্ত চা দোকানদার শাহজাহান মিয়া বলেন, “আমার পৈতৃক সম্পত্তির ওপর দিয়ে চলাচল করতে দেব না। এটা কোনো সরকারি রাস্তা নয়, আগে এখানে ভাটা থাকাকালীন সময়ে এই রাস্তা তৈরি হয়েছিল। চা খাওয়া না খাওয়ার জন্য রাস্তা বন্ধ করিনি। আমার জমি দিয়ে রাস্তা দিতে না চাইলে দোষ কোথায়? ম্যাপের রাস্তা বের করে চলাচল করলেই তো হয়।”
বল্লমঝাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুলফিকার রহমান বলেন, বিষয়টি অবগত আছি। জমির মালিক শাহজাহান মিয়াকে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকা হয়েছে। আশা করি সমাধান হবে।