পাওনা টাকা চাওয়ায় এবং পৈত্রিক সম্পত্তির বন্টন নামা থেকে বৃদ্ধ মা ও তিন বোনকে বঞ্চিত করার প্রতিবাদ করায় জেরধরে বড় ভাইয়ের সাথে বিরোধের সূত্রপাত ঘটে ছোট ভাইয়ের। এরপর থেকে কারণে অকারণে অদ্যবর্ধি থানায় দশটি লিখিত অভিযোগ, একটি জিডি ও আদালতে একটি মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে ছোট ভাইকে।
মামলাবাজ বড় ভাইয়ের হয়রানীর শিকার হয়ে ছোট ভাই আজ নিঃস্ব হয়ে পরেছেন। এ ঘটনায় একাধিকবার পারিবারিক ও স্থানীয়ভাবে মীমাংসার আয়োজন করা হলেও প্রতিটি বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন বড় ভাই আইউব আলী হাওলাদার। ঘটনাটি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার দিয়াশুর গ্রামের।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে ওই গ্রামের মৃত মনজুর আলী হাওলাদারের ছোট ছেলে গৌরনদী বন্দরের ব্যবসায়ী খলিল হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন-তার বড় ভাই ইজিবাইক চালক আইউব আলী হাওলাদারের ছেলে ইসমাইল হোসেনকে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় করে সৌদি আরবে পাঠিয়েছেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় তাকে তিন লাখ দশ হাজার পরিশোধ করা হয়। বাকি টাকা পরিশোধ না করে তার বড় ভাই নানা তালবাহানা শুরু করেন। এনিয়ে প্রথমে তার ভাই আইউব আলী হাওলাদারের সাথে বিরোধ দেখা হয়।
খলিল হাওলাদার আরও অভিযোগ করেন, পরবর্তীতে তার বাবার রেখে যাওয়া সহায় সম্পত্তি থেকে বৃদ্ধা মা রিজিয়া বেগম ও তিন বোনকে বঞ্চিত করে আইউব আলী একটি বন্টননামা তৈরি করেন। তাতে বাঁধা প্রদান করায় দ্বিতীয় দফায় বড় ভাই আইউব আলীর সাথে তার বিরোধের সৃষ্টি হয়।
খলিল হাওলাদার বলেন-এ দুটি বিরোধকে কেন্দ্র করে কারণে অকারণে ইতোমধ্যে আইউব আলী তার বিরুদ্ধে থানায় দশটি মিথ্যে অভিযোগ, একটি সাধারণ ডায়েরী ও আদালতে একটি মামলা দায়ের করে হয়রানি শুরু করেন। খলিল হাওলাদার অভিযোগ করেন, থানার কতিপয় দারোগার সোর্স হিসেবে পরিচিত আইউব আলীর সাথে অন্যকোন ব্যক্তির বাগবিতন্ডা হলেও সেসব ঘটনায় তাকে (খলিল) অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ দিয়ে হয়রানী করা হয়। খলিলের পক্ষালম্বন করে এসব ঘটনার প্রতিবাদ করায় আইউব আলী তার অপর ভাই আবদুল জলিলের বিরুদ্ধেও থানায় দুটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
উপায়অন্তুর না পেয়ে অতিসম্প্রতি খলিল হাওলাদার ও তার অন্যান্য ভাইয়েরা স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিদের স্মরনাপন্ন হওয়ার পর উভয়ের সম্মতিতে মীমাংসার আয়োজন করা হয়। সেই মীমাংসা বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন থানার সোর্স হিসেবে পরিচিত মামলাবাজ আইউব আলী হাওলাদার। পরবর্তীতে মীমাংসা বৈঠকে উপস্থিত না থাকায় স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিদের সাথে আইউব আলীর বাগবিতন্ডা হলে উল্টো খলিল হাওলাদারকে অভিযুক্ত করে আইউব আলী থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন। পুলিশ ওই সাধারন ডায়েরীর তদন্ত না করেই আদালতে প্রসিকিউশন দাখিল করেছেন।
সাধারন ডায়েরীর স্বাক্ষী কালাম হাওলাদার ও তুহিন হাওলাদারসহ অন্যান্যরা জানিয়েছেন-তাদের স্বাক্ষী দেওয়ার বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না। এমনকি থানা পুলিশ কখনও তাদের সাথে কথাও বলেননি। এছাড়া সাধারন ডায়েরীতে যে ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সেসময় তারা ওই এলাকায় উপস্থিতও ছিলেন না।
ভূক্তভোগী খলিল হাওলাদার বলেন-থানার সোর্স হওয়ায় কতিপয় দারোগার ইন্ধনে তার বড় ভাই আইউব আলী হাওলাদার একের পর এক মিথ্যে মামলা ও অভিযোগ দিয়ে তাকে হয়রানী করে আসছে। মামলাবাজ ভাইয়ের এসব হয়রানী থেকে রেহাই পেতে তিনি (খলিল) প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আইউব আলী হাওলাদারের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে থানার সোর্স পরিচয়ের অভিযোগ অস্বীকার করে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. তরিকুল ইসলাম বলেন-অহেতুক কোন মানুষকে হয়রানী করার প্রশ্নই আসেনা। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।