জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর সদর-রুকিন্দিপুর পাঁচমাথা ভায়া বটতলী হাট রাস্তায় নির্মিত আরসিসি গার্ডার সেতু সাধারণ মানুষের জন্য কোনো সুফল বয়ে আনতে পারেনি। প্রায় ৯০ ভাগ কাজ শেষ হলেও সরু সংযোগ সড়কের কারণে ওই সেতু যানবাহন ও মানুষের চলাচলে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না।
স্থানীয় প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানাগেছ, স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের অধিনে ঝটচজই প্রকল্পের আওতায় ২০২২-২৩ অর্থ বছরে দুই কোটি, ৯৬লক্ষ ৪৬হাজার, ৬৫৫টাকা ব্যায়ে ৫৮০০মিঃ চেইনেজে ২৫মিঃ দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মান কাজ করছেন মের্সাস বসুন্ধরা হাউজ বিল্ডার্স, নওগাঁর একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সেতুর উত্তর পাশে ব্যক্তি মালিকানাধীন তিনটি কাঠাল গাছ, পূর্ব পাশে একটি পরিত্যক্ত স্কুলঘর, এবং দক্ষিণ পাশে ঈদগাহ মাঠের প্রাচীর সড়ক প্রশস্তকরণের প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনকে বারবার জানানো হলেও কোনো সমাধান হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই সেতু নির্মাণ পরিকল্পনাহীনভাবে হওয়ায় তারা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সেতুর দুই পাশে গার্ডার নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। পুরাতন ইট, নিম্নমানের ইটের খোয়া ও চিকন বালু দিয়ে কাজ চলছে। স্থানীয় প্রকৌশলীর উপস্থিতি ছাড়াই কাজ চলতে থাকায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান জায়বদ্দিন জানান, সেতুটির নির্মাণে বারবার নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়টি জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সেতু নির্মাণ চলাকালীন সংযোগ সড়ক তৈরিতে যেমনতেমন কাজ করা হয়, যা এলাকাবাসীর জন্য দীর্ঘদিন দুর্ভোগের কারণ হয়েছে।
বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, "সেতু নির্মাণ প্রায় শেষ হলেও সংযোগ সড়ক প্রশস্ত না হলে এটি কোনো কাজে আসবে না। স্কুলঘর ও ঈদগাহ মাঠের প্রাচীর ভেঙে রাস্তা প্রশস্ত করাই এখন সবচেয়ে জরুরি।"
স্থানীয় শিক্ষক ছগির মৃধা বলেন, "এই সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর উপজেলার হাজারো মানুষ যাতায়াত করে। কিন্তু সরু রাস্তার কারণে যানবাহন ও সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দ্রুত রাস্তাটি প্রশস্ত করার প্রয়োজন।"
আক্কেলপুর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী অলিউল্লাহ শেখ জানান, সেতুর নির্মাণ কাজের বিভিন্ন পরীক্ষা এবং প্রতিবেদন তাদের কাছে রয়েছে। তবে সংযোগ সড়ক প্রশস্তকরণ নিয়ে এখনো কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি।
ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুরের মানুষ দ্রুত সংযোগ সড়ক প্রশস্ত করার দাবি জানাচ্ছেন। সঠিক পরিকল্পনা এবং কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে প্রায় তিন কোটি টাকার এই সেতু এলাকাবাসীর জন্য কোনো সুফল বয়ে আনবে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।