দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ যখন নানা রকম সুযোগ-সুবিধা আর দাবী-দাওয়া নিয়ে রাজপথে সরব তখন তালপাতার তৈরী জীর্ণ কুঁড়ে ঘরে দুমুঠো ভাতের আশায় আর একটি শীতবস্ত্রের জন্য তীর্থের কাকের মতো চেয়ে আছে সত্তরোর্ধ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অসহায় প্রবীণ নারী নীলমনি টুডু। নীলমুনি টুডুর বাস উপজেলার পাটিচরা ইউনিয়নের ডোহানগর গ্রামে। স্বামী বিগত হয়েছেন প্রায় একযুগ আগে। সৎ ছেলে-মেয়েদের ঘরে ঠাঁই না হওয়ায় বিভিন্ন পথে প্রান্তরে ঘুরে ঘুরে বর্তমানে ঠাঁই করে নিয়েছেন গ্রামের পাকা সড়কের পাশে রাস্তার উপরে তালপাতার তৈরী একটি জীর্ণ কুঁড়েঘরে। নীলমুনির বয়স প্রায় সত্তর বছর পেরিয়ে গেলেও তাঁর কপালে জোটেনি কোন বয়স্ক বা বিধবা ভাতা। এই বয়সে ঠিকমতো চলাফেরা করতে না পারলেও প্রতিবেশীদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভিক্ষা করে দুমুঠো খেয়ে না খেয়ে কোন রকমে জীবণযাপন করে থাকেন তিনি। সরেজমিনে বুধবার সকালে নীলমনির তালপাতার জীর্ণ কুঁড়েঘরে গিয়ে দেখা গেছে, তীব্র শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে গাঁয়ে একটি ছেঁড়া কাঁথা মুড়িয়ে বসে আছেন। নীলমনির সাথে কথা বললে তিনি জানান, বাবুলাল হাসদা নামে তাঁর একটি সৎ ছেলে আছে যে গ্রামেই পরিবার পরিজন নিয়ে বাস করে। কিন্তু তাঁর কোন খবর রাখেন না এবং ভরণপোষণ করেন না। সরকারি কোন ভাতা তিনি পাননা। তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রটিও তিনি কোথায় হারিয়ে ফেলেছেন বলতে পারেন না। প্রচন্ড শীতের মধ্যে তিনি খুব কষ্ট পেলেও কেউ শীতবস্ত্র দিয়ে সহায়তা করেনি। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য বিপুল চন্দ্র দাস বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর নীলমনি দীর্ঘসময় এলাকায় না থাকায় তাকে সরকারি ভাতায় অন্তর্ভূক্ত করা সম্ভব হয়নি। সরকারি সহায়তা প্রাপ্তী সাপেক্ষে পরবর্তিতে পরিষদের সেবায় নীলমনিকে অন্তর্ভূক্ত করা হবে।