ধানমন্ডিতে মানবপাচার চক্রের শাহীন সোলায়মান গ্রেপ্তার

প্রেস বিজ্ঞপ্তি
| আপডেট: ১ নভেম্বর, ২০২৫, ০৪:২৩ পিএম | প্রকাশ: ১ নভেম্বর, ২০২৫, ০৪:২১ পিএম
ধানমন্ডিতে মানবপাচার চক্রের শাহীন সোলায়মান গ্রেপ্তার

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল ধানমন্ডি থেকে শাহীন সোলায়মান মোল্লা নামে এক প্রতারককে আটক করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ধানমন্ডি ৬ নম্বর রোডের ২৯ নম্বর হাউজ, লিগ্যাসি বিল্ডিং-এর এম-এফ ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানকালে ফ্ল্যাটে উপস্থিত তানিয়া নামের এক নারী নিজেকে শাহীনের স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেন। তবে তিনি বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি বলে জানিয়েছে পুলিশ। ধানমন্ডি থেকে গ্রেপ্তার প্রতারক শাহীন সোলায়মান মোল্লার বিরুদ্ধে মানবপাচার ও আন্তর্জাতিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ ও ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা গেছে, শাহীন সোলায়মান দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জাল ও প্রতারণামূলক কর্মকান্ডে জুড়িত ছিলেন। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি একসময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে এনসিপির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন সময়ে অসংখ্য মানুষকে বিদেশে পাঠানোর নামে প্রতারণা করেছেন। ভুক্তভোগীরা জানান, শাহীন লন্ডনে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে ফিলিপাইনে নিয়ে যেতেন। সেখানে নিয়ে তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে বড় অঙ্কের টাকা আদায় করতেন। টাকা না দিলে নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়ানো হতো বলে অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, শাহীনের বিরুদ্ধে একাধিক প্রতারণা ও মানবপাচারের মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। গ্রেপ্তার প্রতারক শাহীন সোলায়মান মোল্লার প্রতারণা ও মানবপাচার চক্রে তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ ও ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা গেছে, শাহীন দীর্ঘদিন ধরে জাল নথিপত্র তৈরি, বিদেশে ভিসা ও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে আসছিলেন। অভিযোগে জানা যায়, শাহীনের মা পেয়ারা বেগম, তাঁর স্ত্রী ও সন্তান বিশেষ করে তাঁর ছেলেরা এই প্রতারণা নেটওয়ার্কে সরাসরি জড়িত। ভুক্তভোগীরা দাবি করেছেন, বিদেশে নেওয়া ব্যক্তিদের ওপর নির্যাতন ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে টাকা আদায় করা হতো, যা মূলত দেশে থাকা পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হতো। অভিযুক্ত শাহীন নিজেকে নানা সময়ে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিচয়ে উপস্থাপন করতেন। কখনো তিনি আওয়ামী লীগ বা এনসিপির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার দাবি করতেন, আবার কখনো বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা হিসেবেও পরিচয় দিতেন বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে। তবে এসব পরিচয়ের সত্যতা ভুক্তভোগীরা যাচাই করতে পারেননি। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো দাবি করেছেন, এই ধরনের সংগঠিত প্রতারণা ও নির্যাতনের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তারা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও বিচার বিভাগীয় সংস্থার কাছে ন্যায়বিচারের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মহানগর ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে। চক্রের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করতে একাধিক জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। নির্যাতিতদের সুরক্ষা, তদন্তে  প্রমাণ সংগ্রহের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের দাবি, প্রমাণের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শীঘ্রই ঘটনার বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে। স্থানীয়রা ও ভুক্তভোগী পরিবারগুলো আশা করছেন, তদন্ত দ্রুত ও স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হবে, যাতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যায় এবং ভবিষ্যতে এমন অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধ সম্ভব হয়। 

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে