মাদক কারবারি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে: কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে

এফএনএস
| আপডেট: ৪ নভেম্বর, ২০২৫, ০৭:১৭ পিএম | প্রকাশ: ৪ নভেম্বর, ২০২৫, ০৭:১৭ পিএম
মাদক কারবারি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে: কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে

মাদক ব্যবসায় বাড়ছে মাফিয়ার দৌরাত্ম্য। মাদক মাফিয়ারা এই সর্বনাশা ব্যবসায় তরুণ শিক্ষার্থীদের বেছে নিচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। জানা গেছে, মাদক কারবারিচক্র তাদের ব্যবসায় বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করছে। স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনা থেকে শুরু করে সারা দেশের অলিগলিতে এখন হাত বাড়ালেই মাদকদ্রব্য মিলছে। গ্রামাঞ্চলেও এখন সহজলভ্য মাদক। অনলাইনে চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। ক্রমাগত মাদকের চাহিদা বাড়ায় প্রতিবছর দেশ থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি পাচার হয়ে যাচ্ছে। অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের একটা অংশ শুধু মাদক সেবনই নয়, মাদক বেচাকেনায়ও জড়িয়ে পড়ছে। এসব শিক্ষার্থীকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে আরো তৎপর হতে হবে। বাংলাদেশে অতীতে অনেকবার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স বা যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, কিন্তু কাজের কাজ তেমন কিছুই হয়নি। মাদকের বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে বর্তমানে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন ৮৩ জন ‘গডফাদার’। তাঁদের শীর্ষ পর্যায়ের সহযোগী রয়েছেন এক হাজার ১৮৫ জন। তালিকাভুক্ত এসব শীর্ষ ব্যবসায়ী মূলত সীমান্ত ও আকাশপথে ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য দেশে আনছেন। তালিকাভুক্ত মাদকের গডফাদাররা পর্দার আড়ালে থেকে সব সময় এই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন। সহযোগীদের দিয়ে রাজধানীসহ সারা দেশে সেই মাদক ছড়িয়ে দিচ্ছেন তাঁরা। এতে আসক্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি ধ্বংস হচ্ছে তরুণসমাজ। শিশু-কিশোররাও মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। ডিএনসির প্রতিবেদন বলছে, ২০২২ থেকে ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে (রিহ্যাব) গেছে অন্তত ৫৫ হাজার মাদকসেবী। গত পাঁচ বছরে রিহ্যাবে চিকিৎসা নেওয়া নারী মাদকাসক্ত বেড়েছে পাঁচ গুণ। ১৫ বছর ও তার কম বয়সী মাদকাসক্ত বেড়ে হয়েছে তিন গুণ। মাদকের অর্থ জোগাড় করতে গিয়ে তরুণদের অনেকেই ছিনতাইসহ নানা অপরাধে জড়াচ্ছে। ২০১৯ সালে জাতিসংঘের এক গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মাদকপাচারের প্রধান দুটি আন্তর্জাতিক রুটের একটিতে রয়েছে বাংলাদেশ। ফলে বাংলাদেশেও মাদকের উপস্থিতি ক্রমেই বাড়ছে।  মাদকের প্রভাব সামাজিক বিপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থা থেকে ঘুরে না দাঁড়ালে ভয়ংকর পরিণতি রোধ করা যাবে না। কাজেই মাদক ব্যবসার মূল হোতাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। তাঁদের বিচারপ্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে হবে। একই সঙ্গে যেকোনো মূল্যে মাদকের অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে। যেভাবেই হোক মাদকের বিস্তার রোধ করতে হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে