ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে গ্রেপ্তারের প্রায় ১ ঘন্টা পর পুলিশের কাছ থেকে গাজী বোরহান মিয়া নামের এক যুবলীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিয়েছে তার গোত্রের লোকজন। উপজেলার অরূয়াইল বাজারে মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়েছেন ৩ পুলিশ সদস্য। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দেড় শতাধিক লোকের বিরূদ্ধে মামলা করেছে। মঙ্গলবার রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছেন। আব্দুর রশিদের ছেলে বোরহান অরূয়াইল ইউপি আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক। তার বিরূদ্ধে একটি হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বিকেলের দিকে অরূয়াইল ইউপি আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামী গাজী বোরহানকে গ্রেপ্তার করেন স্থানীয় ফাঁড়ির এস আই টিপু সুলতান। তারা বোরহানকে ফাঁড়িতে প্রায় ঘন্টা খানেক রাখেন। সরাইল থানা থেকে কয়েকজন পুলিশ অরূয়াইলে যান। ইতিমধ্যে বোরহানের গোত্রের কয়েকশত লোক বাজারে জড়ো হয়। সন্ধ্যার পর বোরহানকে নিয়ে সিএনজি চালিত দুটি অটোরিকশায় করে পুলিশ সরাইলের উদ্যেশ্যে রওনা দেন। বাজারেই ওই অটোরিকশায় হামলা চালিয়ে পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি করে যুবলীগ নেতা বোরহানকে ছিনিয়ে নেয় তার গোত্রের লোকজন। এ ঘটনায় ৩ পুলিশ সদস্য আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- এস আই রাসেল মিয়া, কন্সটেবল হাবিবুর রহমান ও কন্সটেবল আনিছুল হক। পুলিশের উপল হামলা ও দায়িত্ব পালনে বাঁধার অভিযোগে এস আই টিপু সুলতান বাদী হয়ে দেড় শতাধিক লোককে আসামী করে একটি মামলা করেছেন। মঙ্গলরাতে অরূয়াইলে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৩ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- জীবন কর্মকার (৩৮), সাগর (২৩) ও মেজবাহ উদ্দিন (৩০)। স্বজনরা জানায়, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি মেজবাহ উদ্দিন নয়, তার নাম মিছবাউল হক (এনআইডি নম্বর- ৩৭২১৫৯১৬২০)। পিতা- আবদুল মুকিত ও মাতা আনোয়ারা বেগম। তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার হাবলাউচ্চ এলাকায়। তবে ছিনিয়ে নেওয়ার ২২ ঘন্টা পরও বোরহানকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। অরূয়াইল ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বলেন, ‘পুলিশ যুবলীগ নেতা গাজী বোরহানকে গ্রেপ্তার করলো। পরে একজন গ্রেপ্তারী পরোয়ানার আসামীকে তাদের কাছ থেকে কিভাবে ছিনিয়ে নিয়ে গেল, তারাই ভালো বলতে পারবেন। যেহেতু গ্রেপ্তারের পরই অনেক লোক পুলিশ ক্যাম্পে এসেছে। সেহেতু যথাযথ নিরাপত্তার মাধ্যমে তাকে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। শুধু দুটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা ঠিক হয়নি।’ এস আই টিপু সুলতান যুবলীগ নেতাকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এ সময় ধস্তাধস্তিতে আমাদের ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। মামলা হয়েছে। ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোর্শেদুল আলম চৌধুরী বলেন, পুলিশের অভিযানে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ৩ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে নামীয় ১৫ জন ও অজ্ঞাতনামা দেড় শতাধিক লোকের বিরূদ্ধে মামলা হয়েছে।