ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ৬ নভেম্বর, ২০২৫, ০৩:১৮ পিএম
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে, এমন মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেছেন, চতুর্দশ সংসদ নির্বাচনের সময় যেভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কার্যকর ছিল, তা পুনরায় প্রযোজ্য হওয়া উচিত।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানিতে তিনি এই মন্তব্য করেন। এই শুনানি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে বুধবারও প্রায় দেড় ঘণ্টা তিনি শুনানিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করা রায় বহাল থাকা উচিত নয়। রায় পরিবর্তন করে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক দণ্ডনীয় অপরাধ করেছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের যুক্তি ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভ্রান্তপ্রসূত।” তিনি আরও যোগ করেন, গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে সংবিধানে যে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হলে তা মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থি হবে না।

গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন মঞ্জুর করে সর্বোচ্চ আদালত। এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন। ২০১১ সালে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায় দেন।

বিএনপির আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় ছিল জাতির সঙ্গে প্রতারণার শামিল। আসন্ন নির্বাচনের আগে রায় হলেও, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন অবশ্যই অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে।”

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে রিট করা হয়, যা ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্টে খারিজ করা হয়। পরবর্তীতে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় ঘোষণা করা হয়।

গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন। এছাড়া বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ নেতা-মহাসচিবরা আরও আবেদন করেন। এই প্রক্রিয়ায় আপিল শুনানি ২১ অক্টোবর থেকে নিয়মিতভাবে চলছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে