খুলনার ঝপঝপিয়া নদী ভাঙন : আতঙ্কে ছয় গ্রামের মানুষ

এফএনএস (এম এ আজিম; খুলনা) : | প্রকাশ: ৬ নভেম্বর, ২০২৫, ০৫:৪৩ পিএম
খুলনার ঝপঝপিয়া নদী ভাঙন : আতঙ্কে ছয় গ্রামের মানুষ

জেলার দাকোপ উপজেলার পানখালী ইউনিয়নের মৌখালী গ্রামে ঝপঝপিয়া নদীর ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে ৬টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ দ্রুত সংস্কার করা না হলে যে কোন মুহূর্তে নদী ভাঙ্গনে চালনাসহ পানখালী ও তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগেই দ্রুত ঝুঁকিপূর্ণ এ বাঁধ সংস্কারের  স্থানীয় অধিবাসীরা পাউবো কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পাউবো’র ৩১নং পোল্ডারের পানখালী ইউনিয়নের মৌখালী গ্রামে গত দুইদিন ধরে গাজী বাড়ির সামনে ২শ’ মিটার ভেড়িবাঁধে ভয়াবহ ফাঁটল দেখা দেয়। সেখান থেকে ইতিমধ্যেই এক তৃতীয়াংশ বাঁধ ঝপঝপিয়া নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এ ভাঙনকে কেন্দ্র করে ইউনিয়নের মৌখালী, পানখালী, লক্ষ্ণীখোলা, খাটাইল, কাটাবুনিয়া ও হোগলাবুনিয়া গ্রামের প্রায় ২ হাজার পরিবারের ২০ হাজার মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। এছাড়াও উপজেলার ভদ্রা, আন্ধার মানিক, পশুর, ঢাকী ও শিবসা নদীর পানি ৩ থেকে ৪ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে পাউবো’র ৩১নং পোল্ডারের পানখালী ইউনিয়নের লক্ষ্ণীখোলা, পানখালী জাবেরের খেয়াঘাটের পশ্চিম পাশে, খোনা, তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের ঝলবুনিয়া, মোজাম নগর, আন্ধার মানিক, চালনা পৌরসভার খলিশা নামক স্থানে নতুন করে নদী ভাঙন ও ফাঁটল শুরু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো দ্রুত সংস্কার করা নাহলে যে কোন মুহূর্তে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের একটি অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে প্লাবিত হওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। 

স্থানীয় মুদি ব্যবসায়ী তৈয়বুর রহমান বলেন, গত কয়েকদিন আগে মৌখালী গাজী বাড়ির সামনে ভয়াবহ ফাঁটল দেখা দিলে তখন এটা সংস্কারের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে অবহিত করি। তিনিও তখন সংশ্লিষ্ট পাউবো’র কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি তাৎক্ষণিক মুঠো ফোনের মাধ্যমে অবগত করেন। তখন পাউবো এ ভেড়িবাঁধ রক্ষার্থে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ফলে গত দুইদিনে ভেড়িবাঁধটির অধিকাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আর এ কারণে মৌখালী গ্রামের শত শত পরিবার আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।

পানখালী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ সাব্বির আহম্মেদ জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পাউবোর এ বাঁধটি খরস্রােতা ঝপঝপিয়ার নদীর ভয়াবহ ভাঙনে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দ্রুত বিকল্প বাঁধ নির্মাণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এলাকায় এসে বাঁধটি পর্যবেক্ষণ করেছেন। আশা করা হচ্ছে অতিদ্রুত পাউবো এ ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধটি রক্ষায় কাজ শুরু করবেন।      

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো-২) খুলনার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মধুসুদন পাল বলেন, ঝপঝপিয়া নদীগর্ভে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ভেড়িবাঁধটি সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেছি। দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সমীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়া আশপাশের কয়েকটি স্থানে নদী ভাঙন রোধে পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য পাউবো’র উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে খুলনা পানি উন্নয়ন বিভাগ-২ (বাপাউবো)’র খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম  বলেন, দাকোপের ঝপঝপিয়া নদীর ৭০ মিটারের মত বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে মূল নদী থেকে ১৫ মিটারের মত দূরত্মে রয়েছে। ফলে বাঁধ ভেঙ্গে নদীতে বিলীন হওয়ার আশংকা নেই। তবে, বাঁধের বাইরে একটি মসজিদ রয়েছে। সবকিছু মিলে আমরা একটি সার্ভে করছি। সার্ভে শেষ হলে বাঁধ রক্ষায় জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। 

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে