জাহাজ নির্মাণ শিল্পের সম্ভাবনাকে গুরুত্ব দিন

এফএনএস | প্রকাশ: ৬ নভেম্বর, ২০২৫, ০৭:৪২ পিএম
জাহাজ নির্মাণ শিল্পের সম্ভাবনাকে গুরুত্ব দিন

দেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প নতুন সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখাচ্ছে। দেশের মানুষের জন্য কর্মসংস্থান তৈরীতে অবদান রাখছে এ শিল্প। অর্থনীতিবিদদের মতে, বাংলাদেশে তৈরিকৃত জাহাজ বিদেশে রপ্তানি শুরু হলে অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত উম্মোচিত হবে। সরকারের যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা এবং পুঁজি বিনিয়োগকারিরা এ খাতে মনোযোগী হলে আগামীতে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক খাতে নতুন এক বিপ্লবের সূচনা ঘটবে। প্রতি বছর আয় হবে কয়েক হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা। এ খাত থেকে কর্মসংস্থান হবে লক্ষাধিক দক্ষ শ্রমিক। শুধু তাই নয়, জাহাজ নির্মাণে বাংলাদেশকে পরিপূর্ণ একটি দেশে পরিণত করার দুর্লভ সুযোগ করা গেলে এ খাতটি এ দেশের বিদ্যমান সব ক’টি খাতকে ছাড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রথম স্থানে চলে যাবে। জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বাংলাদেশের গর্বিত অতীত আছে। বলা যায়, জাহাজ নির্মাণে বাংলাদেশ আবার সেই গৌরবোজ্জ্বল অতীত ফিরিয়ে আনার পথে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের নির্মিত জাহাজ ইউরোপে রফতানি হচ্ছে। বাংলাদেশে নির্মিত জাহাজ বেশ উন্নত বলে ইউরোপে প্রশংসিত হয়েছে। নানা কারণেই জাহাজ নির্মাণ শিল্পের জন্য বাংলাদেশ অন্যতম স্থান হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় তুলনামূলক কম খরচ। জাহাজ নির্মাণে প্রচুর দক্ষ-অদক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশে জাহাজ নির্মাণে স্বল্প খরচে প্রচুর শ্রমিক পাওয়া যায়। আর এ কারণে নির্মাণ খরচ অনেক কম। দক্ষিণাঞ্চল সমুদ্রবেষ্ঠিত হওয়ায় ভৌগলিক সুবিধা এ সম্ভাবনার ক্ষেত্রে অন্যতম সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বৈশ্বিক মন্দা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে স্থবির হয়ে পড়া বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প আবারও আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করছে। জাহাজ নির্মাণ একটি বিশাল ব্যাপার। জাহাজ নির্মাণে যেমন প্রয়োজন উঁচু মানের কারিগরি দক্ষতা, ঠিক তেমনি প্রয়োজন উন্নত এবং দক্ষ ব্যবস্থাপনা। তাছাড়া প্রয়োজন বিরাট অংকের বিনিয়োগ। বর্তমানে একটি ছোট আকারের জাহাজ নির্মাণ করতে প্রায় ২৫/৩০ কোটি এবং বড় আকারের জাহাজ নির্মাণে শত কোটি টাকা প্রয়োজন হয়। জাহাজ নির্মাণ শিল্পকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সরকারকে এই শিল্পের প্রতি সর্বাত্বকভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। এই শিল্পের বিকাশে বিদ্যমান সকল প্রতিকূলতাকে দূর করতে হবে। এই শিল্পে ইনসেনটিভ দিতে হবে এবং এর অগ্রগতির জন্য বিশেষ মন্ত্রণালয় ও মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যাংকের পাশাপাশি ইনস্যুরেন্স, কাস্টম এবং বন্দরসহ সকলকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। জাহাজ রপ্তানির বিদ্যমান সুযোগের পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করতে হবে। এর জন্য দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতিদের জাহাজ নির্মাণে এগিয়ে আসতে হবে। প্রয়োজনে জাহাজ নির্মাণে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ বিদেশি উদ্যোক্তাদের সাথে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।