ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ২৩৭টি আসনে প্রাথমিক প্রার্থী ঘোষনা করে। এরমধ্যে পবনা-৩ (চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া-ফরিদপুর) আসনে জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের নাম ঘোষনা করা হয়েছে। ঘোষনার পরপরই তুহিনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা আনন্দ-উল্লাস করেছেন,মিষ্টি খেয়েছেন। হাসান জাফির তুহিনও তাৎক্ষনিক সংবাদ সম্মেলন করে সকলকে সাথে নিয়ে নির্বাচন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
এদিকে কৃষকদল নেতা হাসান জাফির তুহিনকে মনোনয়ন দেওয়ায় বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। অনেক নেতা-কর্মী এ সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা হাইকমান্ডের কাছে প্রার্থী বাছাই পুনর্বিবেচনার দাবি তুলেছেন। প্রার্থী ঘোষনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ কেউ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। মনোনয়বঞ্চিত বিএনপির স্থানীয় দুই নেতা স্থানীয় প্রার্থীর দাবিতে কর্মসূচি ঘোষনা করেছেন। আগামী সোমবার (১০ নভেম্বর) তারা গণসমাবেশের ডাক দিয়েছেন। উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পাবনা-৩ এলাকা।
এ আসনে বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক এমপি ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কে এম আনোয়ারুল ইসলাম এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসাদুল ইসলাম হীরা দলীয় সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয় প্রার্থীর দাবিতে তারা গণসমাবেশের ডাক দিয়েছেন। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে সাংবাদিকদের মাধ্যমে গণসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষনা করেন।
আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য হাসানুল ইসলাম রাজা নিজের প্রার্থীতা ঘোষনা করে বলেছেন,তিনি জনগণকে সাথে নিয়ে নির্বাচন করবন।
মনোনয়নবঞ্চিত হাসাদুল ইসলাম হীরা বলেন,গত ১৭ বছরে উনি (হাসান জাফির তুহিন) এই এলাকায় ছিলেন না। তাঁকে কীভাবে মনোনয়ন দিলো জানিনা। তার জনপ্রিয়তা ৫ ভাগ। আমি দীর্ঘদিন নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছি,জেল খেটেছি। দলকে সুসংগঠিত করেছি। হাসান জাফির তুহিনের মনোনয়ন জনগণ মানছেন না। আমি চাই মনোনয়ন পরিবর্তন করা হোক,বিএনপি কর্মী-সমর্থক ও সাধারণ মানুষও তাই চান। তৃণমূলের রিপোর্ট নিয়ে মনোনয়ন দেওয়া হোক।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি,সাবেক এমপি কে এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন,পাবনা-৩ আসনে প্রার্থী পরিবর্তন চাই। বহিরাগত কাউকে এলাকার মানুষ মানছেনা। স্থানীয় প্রার্থীর দাবিতে আমরা কর্মসূচি ঘোষনা করেছি। আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
হাসান জাফির তুহিন বলেছেন,বড় দলে একাধিক মনোনয়প্রত্যাশী থাকতেই পারে। আমি সবাইকে নিয়েই নির্বাচন করবো। যারা মনোনয়ন চেয়েছিলেন,তাদের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। আশা করি তাদের সাথে নিয়ে,তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ধানের শীষের বিজয় নিয়ে আসতে পারবো।
অপরদিকে হাসান জাফির তুহিনের মনোনয়ন ঘোষনাকে উৎসবে পরিণত করেছে তাঁর নেতা-কর্মী-সমর্থকরা। বিশাল মোটরসাইকেল শোডাউন করা হয়েছে তাঁর সমর্থনে। ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ভিড় লেগেই আছে তার নির্বাচনী কার্যালয়ে।