মধ্যরাতে বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের কম্পাউন্ডে শত শত মানুষ কার্যালয়ে প্রবেশ করে জব্দকৃত অবৈধ জাটকা মাছ লুট করে নিয়ে গেছে। এসময় ঘটনাস্থলে চারজন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করলেও লুটরোধে তারা ব্যর্থ হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন মৎস্য কর্মকর্তা বেশ কয়েক বক্স জাটকা সরিয়ে রেখে অল্প কিছু বিতরণ করতে গেলে তখন হট্টগোল বাঁধে। এরপর সেখানে ঘণ্টাব্যাপী চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে জেলা মৎস্য অফিসের একাধিক কর্মকর্তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উদ্ধার করা মাছ দুঃস্থদের মাঝে বিতরণকালে কিছু জাটকা লুট হয়েছে কিন্তু স্টাফরা মাছ সরিয়ে ফেলেছে এ অভিযোগ সত্য নয়।
শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে-ওইদিন দিবাগত রাত দশটার দিকে মৎস্য অধিদপ্তরের মধ্যে হঠাত করে হইচই শুরু হয়। এসময় কয়েকজন আনসার সদস্য বাঁশির হুইসেল দিয়ে থামানোর চেষ্টা করলেও শত শত মানুষ মৎস্য অফিসে প্রবেশ করে জাটকার কার্টুন নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু করে। এনিয়ে চলে নিজেদের মধ্যে হাতাতির ঘটনা। একপর্যায়ে এক কার্টুনভর্তি জাটকা লুট করে নিয়ে যায় উত্তেজিত জনতা। এ সময় ঘটনাস্থলে কিছু নারী ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন।
ঘটনাস্থলে থাকা একাধিক নারীরা জানান, মৎস্য অফিসের কয়েকজন স্টাফ সব মাছ নিজেরা নিয়ে অল্প কিছু অফিসের সামনে রেখে গেট খুলে দিয়েছে। এরপর শত শত সাধারণ মানুষ হুমড়ি খেয়ে পরায় এ হরিলুটের ঘটনা ঘটেছে। আমিন হাওলাদার নামের একজন বলেন, মাছ ছিল ১০ থেকে ১২ কার্টুন। কিন্তু এক কার্টুনের মাছ বণ্টন করতে গেট খুলে দেওয়ার পর হুরোহুরি শুরু হয়। জাটকা নিতে আসা নিহারিকা মন্ডল বলেন, একটা জাটকাও পাইনি। সব লুট হয়েছে। অপর একটি ভিডিওতে দেখা গেছে-মৎস্য অফিসের একটি কক্ষে বসে তিনটি কার্টুন থেকে নিজেদের মধ্যে জনপ্রতি ২২টি করে জাটকা ইলিশ ভাগ হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. কামরুল হাসানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ বলেন, আমি অভিযান করতে নিষেধ করেছিলাম, তারপরেও করেছে। আমতলীতেও এভাবে মাছ লুট হয়েছে। সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা আবুল হাসানের নেতৃত্বে অফিসের সামনে বাস থামিয়ে অভিযান চলে। এ সময় কার্টুন ভর্তি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। তবে কী পরিমাণ মাছ উদ্ধার হয়েছে, তা তিনি জানাতে পারেননি। মৎস্য কর্মকর্তা আরও বলেন, কিছু মাছ লোকজন নিয়েছে। সেখানে চারজন আনসার ছিল। স্টাফরা মাছ সরায়নি। যারা বলেছে তারা গুজব ছড়িয়েছে। স্টাফদের জাটকা নেয়ার কোন সুযোগ নেই।