সুনামগঞ্জে এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ মঙ্গলবার এই রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন মো. লিটন আহম্মদ ওরফে লিটন মিয়া। তাকে একই সঙ্গে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বল্লভপুর গ্রামের মো. খলিল মিয়ার ছেলে। মামলার রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌসুলি (পিপি) মো. শামসুর রহমান ও বাদী পক্ষের আইনজীবি এডভোকেট সালেহ আহমেদ।
মামলার বিবরণে উল্লেখ রয়েছে, জেলার দোয়ারবাজার উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের পান্ডারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ফরিদ আহমদের বাড়িতে গত বছরের ২৯ এপ্রিল ঘটনাটি ঘটে। ফরিদ আহমদের স্ত্রী সাবিনা আক্তার তাদের ছোট মেয়ে প্রমি আক্তারকে নিয়ে আগের দিন তাঁর বাবার বাড়ি বেড়াতে যান। সাবিনা আক্তারের বাবার বাড়ি একই উপজেলার যোগীরগাঁও গ্রামে। পরদিন সন্ধ্যায় সাবিনা আক্তার অসুস্থবোধ করলে তিনি চিকিৎসার জন্য স্থানীয় শ্রীপুর বাজারের পল্লী চিকিৎসক নাছির উদ্দিনের ফার্মেসিতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে মধ্যবাজারে আসার পর তাঁর ছেলে মিনহাজ দৌড়ে গিয়ে জানায় তাঁর মেয়ে তমা আক্তার (১৮) ফাঁস লাগানোর মতো ঝুলে রয়েছে। পরে ফরিদ মিয়াসহ অন্যরা বাড়িতে গিয়ে দেখেন তমা আক্তার রান্না ঘরের দরজার তীরের সঙ্গে হাঁটু ভাজ করা অবস্থায় ফাঁস দেওয়ার মতো করে রয়েছে। তমা আক্তারের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। জিহ্বা দাঁত দিয়ে চেপে ধরা এবং পড়নের সেলোয়ার খোলা ছিল।
এ ঘটনায় পরদিন ফরিদ আহমদ বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে দোয়ারাবাজার থানায় ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় লিটন আহমদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। মামলাটির দীর্ঘ বিচারকার্য শেষে আসামি লিটন আহম্মদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৩০২ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মঙ্গলবার আদালতের বিচারক এই রায় ঘোষণা করেন।