জুলাই-আগস্ট গণ অভ্যুত্থানের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় কবে ঘোষণা করা হবে, আজ সেই দিন জানা যাবে।
এরআগে, গত ২৩ অক্টোবর মামলার বিচারকাজ শেষে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রায়ের তারিখ জানানোর জন্য আজকের দিন ধার্য করে দিয়েছিলেন।
সেদিন ট্রাইব্যুনাল জানিয়েছিলেন, রায়ের এই তারিখ হবে অল্প সময়ের মধ্যে। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
শেখ হাসিনা ছাড়া তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও তার সময়ের সর্বশেষ পুলিশপ্রধান (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ-আল-মামুনও এ মামলায় আসামি। তবে চৌধুরী মামুন দোষ স্বীকার করে হয়েছেন রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রুভার)। রাজসাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্যও দিয়েছেন। এ মামলায় মোট ৫৪ জন সাক্ষী উপস্থাপন করে প্রসিকিউশন। ২৮ কার্যদিবসে এসব সাক্ষী উপস্থাপন করে তারা। তবে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে কোনো সাফাই সাক্ষী উপস্থাপন হয়নি ট্রাইব্যুনালে।
এদিকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা এ মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিয়মিত দায়িত্বপালনকারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যের পাশাপাশি আজ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে। পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন।
রায়ের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করে। এ ঘোষণার পর গত ৯ অক্টোবর সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে সুপ্রিম কোর্ট, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবন এলাকায় বহিরাগতদের প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়। এদিকে প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারের রায়ের দিন ঘোষণা কার্যক্রম ঘিরে সরকারের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডার অংশ হিসেবে দেশজুড়ে নৈরাজ্যের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ। তবে এটিকে থ্রেট টু জাস্টিস মনে করি না। বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য তারা এমনটা করছে।
গতকাল ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ে মিজানুল ইসলাম বলেন, আইনানুগভাবে বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এখন দেশে যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে, দৃঢ়তার সঙ্গে এ ধরনের পদক্ষেপকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রুখে দেবে বলে আমার বিশ্বাস।