প্রবাসীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি : আটক ১

এফএনএস (বরিশাল প্রতিবেদক) : | প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:৫৬ পিএম
প্রবাসীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি : আটক ১

অস্ট্রিয়া প্রবাসী এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে মারধর ও মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় একজনকে আটক করে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের কাছে সোর্পদ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বড় ভাই সাইদুল ইসলাম থানায় লিখিত এজাহার দাখিল করেছেন।

বুধবার (১২ নভেম্বর) দিবাগত রাতে লিখিত অভিযোগপ্রাপ্তির সত্যতা স্বীকার করে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে একজন আসামিকে আটক করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে। পাশাপাশি লিখিত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এজাহারে নগরীর বাসিন্দা প্রবাসীর ভাই সাইদুল ইসলাম উল্লেখ করেছেন, তার ছোট ভাই মুরাদুল ইসলাম (৩০) অস্ট্রিয়া প্রবাসী। গত ৫ নভেম্বর সে ছুটিতে দেশে আসেন। এর আগে মুরাদুলের সাথে দীর্ঘ ১৪ বছরের গভীর বন্ধুতের কারণে প্রতারনার মাধ্যমে বাউফলের সূর্যমনি ইউনিয়নের বাসিন্দা বশির উদ্দিনের দুই কোটি টাকা আত্মসাত করেন। ওই ঘটনায় প্রবাসী মুরাদুলের ভাই সাইদুল ইসলাম ছোট ভাইয়ের পক্ষে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।

বাদি সাইদুল ইসলামের দাবি-সেই মামলা দায়েরের পর থেকে বশির উদ্দিন ক্ষুব্ধ হয়ে তার ভাই মুরাদুল ইসলামকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলো। তারই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন বুধবার (১২ নভেম্বর) সকালে পুর্ব পরিচিত রিয়াদ হোসেন (২৩) ফোনে মুরাদুল ইসলামকে দেখা করার কথা রূপাতলীস্থ সোনারগাঁও টেক্সটাইলের সামনে ডেকে নেয়।

প্রবাসী মুরাদুল সেখানে পৌঁছলে রিয়াদ তাকে শাওন পাম্পের বিপরীতে চৌধুরী ভিলা নামক একটি টিনসেড ভবনে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষমান ছিলো সুমন, লোকমান, সজল, রেজাউল, মাহিসহ তাদের আরও ২/৩ জন সহযোগিরা। তারা দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করে প্রবাসী মুরাদুলকে হত্যার ভয় দেখিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে।

বাদি সাইদুল এজাহারে আরও উল্লেখ করেছেন-আসামিরা একজন অজ্ঞাত প্রতিবন্ধী ছেলেকে এনে মারধর করে মুরাদুলকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করার চেষ্টা করে এবং ঘটনাটি মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। তারা ওই ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে প্রবাসী মুরাদুলের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।

এসময় আসামিরা মুরাদুলের সাথে থাকা নগত ২৫ হাজার টাকা, একটি ডায়মন্ড রিং ও একটি রুপার ব্রেসলেট ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে মুক্তিপণের অর্থ আদায়ের জন্য তারা পরিবারের সদস্যদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে (০১৭৩৩-২৪০১১২) নম্বরে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর নির্দেশ দেয়।

প্রাণের ভয়ে বাদি সাইদুল ইসলামের শ্যালক মো. রানা ওই নম্বরে পাঁচ হাজার টাকা প্রেরণ করে। তারপরেও আসামিরা মুরাদুলকে অবরুদ্ধ অবস্থায় সকাল ১০টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। পরে তারা মুরাদুলকে সাথে নিয়ে মুক্তিপনের টাকা নিতে তার বাড়িতে আসে।

তখন ৩ ও ৪ নম্বর আসামি (সুমন ও লোকমান) রিকশায় করে বাসায় আসলে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় বাদি সাইদুল ইসলাম ধাওয়া করে আসামি লোকমানকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। এসময় কৌশলে সুমন পালিয়ে যায়।

বাদি সাইদুল ইসলাম বলেন-আমার ভাই অস্ট্রিয়া প্রবাসী। তার একসময়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু বশির উদ্দিন টাকা আত্মসাতের মামলার প্রতিশোধ নিতে ভাড়াটিয়া লোকজন দিয়ে কৌশলে অপহরন করে হামলা চালিয়ে মুক্তিপন আদায়ের চেষ্টা করছিলো।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে