কাপাসিয়া সদরে বিএনপির বিশাল উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত

এফ এম কামাল হোসেন; কাপাসিয়া, গাজীপুর | প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:৫০ এএম
কাপাসিয়া সদরে বিএনপির বিশাল উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত
গাজীপুর-৪, কাপাসিয়া সংসদীয় আসনে বিএনপির মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের পদপ্রার্থী শাহ রিয়াজুল হান্নানের নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৪ নভেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার সদর ইউনিয়ন বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে স্থানীয় ২ নং ওয়ার্ডের জামিরারচরে এক বিশাল আলোচনা সভা ও মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ''তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি শীর্ষক" উঠান বৈঠকে ইউনিয়নের (কাপাসিয়া ও জামিরারচর) ২ নং ওয়ার্ডের বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ সক্রিয় কর্মীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর মাহমুদ সভাপতিত্ব করেন।

সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাখাওয়াত হোসেন ফকির ও জহিরুল ইসলাম ফকিরের পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি দলীয় প্রার্থী শাহ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ফ ম এমদাদুল হোসেন, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সেলিম হোসেন আরজু, সাধারণ সম্পাদক আজগর হোসেন খান, অ্যাডভোকেট আজিজুল হক বাবুল, ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক মহিবুর রহমান প্রমুখ। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাংগঠনিক কার্যক্রমকে গতিশীল করার কর্মপরিকল্পনায় মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মাঝে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সদস্য ও কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এফ এম কামাল হোসেন, বিএনপি নেতা মেজবাহ উদ্দিন, মেহেদী হাসান বাচ্চু, নূর উদ্দিন, সোলায়মান, হারুন অর রশিদ, সেলিম হোসেন বকুল, আনোয়ার হোসেন, কৃষকদল নেতা মুজাহিদুল ইসলাম অশ্রু, যুবদল নেতা নূরুজ্জামানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং দলীয় মৃত ব্যক্তিদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকের পদপ্রার্থী শাহ রিয়াজুল হান্নান বলেন, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে মা-বোনরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। একটি ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দল বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিরিহ মা-বোনদের বিভ্রান্ত করছে। কর্মজীবী নারীদের কর্মঘন্টা কমিয়ে দেয়ার নামে তাদের সাথে প্রতারণা করছে। এতে তারা কর্মশূণ্য হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং তারা ঘরবন্দি হয়ে পড়বে। তারা সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক ধর্ম পালনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। তারা ধর্মপ্রাণ মুসলমান মা-বোনদের জান্নাত পাইয়ে দেয়ার নিশ্চয়তা দিচ্ছে। অথচ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম ১০ জন সাহাবীর জান্নাতের নিশ্চয়তা দিয়েছেন।

তাদের থেকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। বর্তমান গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে বিএনপি দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী জীবন দিয়েছেন। পতিত ফ্যাসিবাদের দোসররা দীর্ঘ ১৭ বছর আমাদের সাধারণ মানুষের কাছে যেতে দেয়নি। বিনা ভোটের সরকার দাবিদার বিগত দিনে এলাকার কোন উন্নয়ন করেনি। বাক স্বাধীনতা হরণ সহ একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছিল। ১৯৭১ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ঘোষণায় প্রথমবার দেশ স্বাধীন হয়েছে। আর বিএনপির নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফলে ২০২৪ সালে ৫ আগস্ট হাসিনা পালিয়ে যাবার মধ্যদিয়ে দেশ দ্বিতীয় বার স্বাধীন হয়েছে। আমার পিতা মরহুম ব্রিগেডিয়ার হান্নান শাহের প্রতি এলাকার আপামর জনসাধারণের অগাধ আস্থা বিশ্বাস ছিলো। আপনাদের সাথে নিয়েই 'ফকির মজনু শাহ্ সেতু' সহ এলাকার উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করেছিল। জীবদ্দশায় তিনি সকল কাজ করে যেতে পারেন নি।

তাই আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের সমর্থন নিয়ে অসমাপ্ত উন্নয়নমূলক কাজ গুলো সমাধান করবো ইনশাআল্লাহ। আমাদের দলীয় নেতা কর্মীদের উপর দীর্ঘ ১৭ বছর হামলা, মামলা ও নির্যাতন চালিয়েছে। ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার আন্দোলনে বিএনপিই নেতৃত্ব দিয়েছে তিনি আরো বলেন, সাধারণ মানুষের জীবন মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১ দফা ঘোষণা করেছেন। তা বাস্তবায়ন হলে সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন নিশ্চিত হবে। হান্নান শাহ পরিবার বংশ পরম্পরায় কাপাসিয়ার উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। ভবিষ্যতে যেকোনো পরিস্থিতিতে কাপাসিয়ার সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। আগামী নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে দলীয় নেতাকর্মীদের আন্তরিক ভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত।

দল সরকার গঠন করলে কাপাসিয়ায় পরিবেশবান্ধব কলকারখানা স্থাপন, বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান, মাদকমুক্ত সমাজ গঠন এবং মা-বোনদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। মহিলাদের বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতার সংখ্যা বাড়ানো, এলাকার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের ন্যায্য পারিশ্রমিক পাবে। বড় বড় ব্যবসা কেন্দ্রের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ ছোটখাটো পুঁজি খাটিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে সাবলম্বী হতে পারবেন। তাতে জায়গা জমির দাম বেড়ে যাবে। সাধারণ মানুষের শিক্ষা ও উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা হবে। মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখা হবে। আগামী নির্বাচনে দলের সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দদের ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ থেকে ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানান।
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে