সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় প্রতিটি পরিবারেই কেউ না কেউ জ্বরে আক্রান্ত। কারও হালকা ঠান্ডা-কাশি, কারও আবার শরীর ব্যথা, বমি বমি ভাব বা দুর্বলতা। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই বুঝতে পারছেন না-এটা কি সাধারণ ভাইরাল ফ্লু, নাকি ডেঙ্গু বা টাইফয়েডের মতো জটিল কিছু? সঠিকভাবে পার্থক্য জানা জরুরি, কারণ প্রতিটির চিকিৎসা ও যত্ন ভিন্ন। আর শিশুদের ক্ষেত্রে এটি অবহেলার সুযোগই নেই-
ভাইরাল জ্বরের লক্ষণ
হঠাৎ জ্বর, গলা ব্যথা, সর্দি বা কাশি
হালকা শরীর ব্যথা, ক্লান্তি
সাধারণত ৩-৫ দিনের মধ্যে জ্বর কমে যায়
রক্ত পরীক্ষায় কোনও বিশেষ পরিবর্তন থাকে না
যা করবেন
বিশ্রাম নিন, পর্যাপ্ত পানি পান করুন, সহজপাচ্য খাবার খান। প্রয়োজনে প্যারাসিটামল খেতে পারেন।
ডেঙ্গুর লক্ষণ
উচ্চমাত্রার জ্বর (১০২-১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত)
চোখের পেছনে ব্যথা, মাংসপেশি ও জয়েন্টে প্রচণ্ড ব্যথা
শরীরে লাল দাগ বা র্যাশ
বমি বমি ভাব, ক্ষুধামন্দা, দুর্বলতা
প্লাটিলেট কমে যাওয়া (রক্ত পরীক্ষায় ধরা পড়ে)
যা করবেন
জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শে রক্ত পরীক্ষা করুন (সিবিসি, ডেঙ্গু এনএস১ বা আইজিএম)। ডেঙ্গু হলে প্রচুর পানি, স্যালাইন ও তরল খাবার নিন। প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য জ্বরের ওষুধ এড়িয়ে চলুন।
টাইফয়েডের লক্ষণ
ধীরে ধীরে জ্বর বাড়ে, ১০৩-১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে
পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য
মাথা ব্যথা, খিদে না পাওয়া
কখনও জ্বর সকালে কমে, বিকেলে আবার বেড়ে যায়
রক্ত পরীক্ষায় (ডরফধষ বা ঞুঢ়যর উড়ঃ) সংক্রমণ ধরা পড়ে
যা করবেন
চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক শুরু করতে হয়
পর্যাপ্ত বিশ্রাম, তরল ও সেদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি
জ্বর ৩ দিনের বেশি স্থায়ী হলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাবেন
মনে রাখবেন
বর্তমান মৌসুমে ভাইরাল জ্বর, ডেঙ্গু ও টাইফয়েড-সবকটিই ছড়াচ্ছে একসঙ্গে। তাই নিজে নিজে ওষুধ না খেয়ে দ্রুত পরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। সময়মতো চিকিৎসা নিলেই ঝুঁকি অনেক কমে যাবে।